দস্তানা হাতে মিড-ডে মিলের হেঁশেলে

মানবাজার গার্লস হাইস্কুলের রাঁধুনি জবা বাউড়ি, উজ্জ্বলা সিংহ সর্দার, সরস্বতী দত্তরা বলেন, ‘‘এতে খাবারের পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকবে। আর আমরাদের কাপড়েও তেল-হলুদের দাগ পড়াটা কমবে।’’

Advertisement

সমীর দত্ত

মানবাজার শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
Share:

সুরক্ষা: মানবাজার গার্লস হাইস্কুলে চলছে মিড-ডে মিল রান্না। নিজস্ব চিত্র

খেতে বসার আগে হাত ধোবে পড়ুয়ারা আর হেঁশেলে ঢুকেই হাতে দস্তানা গলিয়ে নেবেন রাঁধুনিরা— কিছু দিনের মধ্যেই মিড-ডে মিলে স্বাস্থ্যবিধি আঁটসাঁট হবে এ ভাবে। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন এর জন্য যাবতীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করবে।

Advertisement

কোথাও খাবারে টিকটিকি পড়ে গিয়েছে, খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে পড়ুয়ারা। কোথাও ভাতের মধ্যে মিলেছে চুল। তা নিয়ে স্কুলে এসে ক্ষোভ দেখিয়েছেন অভিভাবকেরা। মিড-ডে মিল নিয়ে এই ধরনের অভিযোগ উঠে আসে প্রায়ই। সেটা যাতে থামে, সে জন্য এ বারে উদ্যোগী হয়েছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। ঠিক হয়েছে, রাঁধুনিরা রান্নার আগে দস্তানা, মাথার ঢাকা এবং অ্যাপ্রন পরবেন। আর স্কুলের শিক্ষকেরাও মিড-ডে মিল খেয়ে তার মান সম্বন্ধে নিশ্চিত হবেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে জেলার প্রতিটি স্কুলে এই সমস্ত সরঞ্জাম পাঠানো শুরু হবে। নতুন বছরে আমরা জেলার সমস্ত স্কুলে রাঁধুনিদের গায়ে এই পোশাক দেখতে চাই।’’

জেলা প্রশাসন এ নিয়ে নির্দেশিকা জারি না করলেও ইতিমধ্যে জেলার কয়েকটি স্কুল নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে রাঁধুনিদের ওই সরঞ্জাম দিয়েছে। মানবাজার থানার গোবিন্দপুর প্রাথমিক স্কুল আর মানবাজার গার্লস হাইস্কুলে এখন থেকেই অ্যাপ্রন পরে রান্না করা হচ্ছে। গোবিন্দপুর প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতাভ মিশ্র বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা পুরস্কার পেয়েছে। এখানে কয়েক মাস ধরে রান্না এবং পরিবেশনের সময় অ্যাপ্রন, গ্লাভস ইত্যাদি ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ মানবাজার গার্লস হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা পাওয়ার আগে থেকেই আমরা স্কুলে রান্নার পোশাক বিধি চালু করে দিয়েছি।’’ মানবাজার গার্লস হাইস্কুলের রাঁধুনি জবা বাউড়ি, উজ্জ্বলা সিংহ সর্দার, সরস্বতী দত্তরা বলেন, ‘‘এতে খাবারের পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকবে। আর আমরাদের কাপড়েও তেল-হলুদের দাগ পড়াটা কমবে।’’

Advertisement

জেলার ৪৩৮৯টি স্কুলে মিড-ডে মিল রান্না হয়। তার মধ্যে ৩০৭১টি প্রাথমিক স্কুল। জেলার স্কুলগুলির মিড-ডে মিলের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, দস্তানা বা অ্যাপ্রনের মতো সরঞ্জাম কেনার জন্য আলাদা ভাবে টাকা বরাদ্দ থাকে না। এ জন্য রাজ্য সরকারের বিশেষ অনুমতি নিতে হয়। তিনি বলেন, ‘‘ওই অনুমতি মিলেছে। আশা করছি দু’-তিন সপ্তাহের মধ্যেই আমরা রাঁধুনিদের অ্যাপ্রন, মাথার ঢাকনা আর দস্তানা দিয়ে দিতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন