মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের পরেই তাঁর নির্দেশে শালতোড়া ঝিল সংস্কারের কাজে গতি এল।
তড়িঘড়ি জেলায় এসে ওই ঝিলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। বুধবার জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে মন্ত্রী দ্রুত ওই ঝিল সংস্কারের পরিকল্পনা ও বাজেট রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিয়ে গেলেন।
সৌমেনবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, দ্রুত ওই ঝিল সংস্কার করে সৌন্দর্যায়নের কাজ করতে হবে। তাঁর নির্দেশেই আমি জেলায় এসেছি। জেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের মধ্যে পরিকল্পনা ও আনুমানিক খরচের হিসেব পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছি।” প্রশাসনের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই অর্থ বরাদ্দ করে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সৌমেনবাবু।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, কেবল সংস্কার করাই নয়, তার পাশাপাশি ঝিলের সৌন্দর্যায়ন, মাছ চাষ করা-সহ আরও বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সৌমেনবাবু জানান, ঝিল সংস্কার, ঘাট বানানোর-র মতো বিভিন্ন কাজ জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর করবে।
এ ছাড়া পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ, সেচ দফতর, জেলা পরিষদের মতো বিভিন্ন দফতর মিলিত ভাবে ওই ঝিলের উন্নয়নে কাজ করবে। তিনি বলেন, “জলসম্পদ দফতর কাজ শুরু করার পরেই অন্যান্য দফতরগুলিও আলাদা ভাবে কাজ শুরু করবে ওই ঝিলে।”
বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “মন্ত্রীর নির্দেশ মতো আমরা শীঘ্রই ওই ঝিল সংস্কারের জন্য আনুমানিক খরচ ও পরিকল্পনার রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু করে দিচ্ছি।”
শালতোড়ার বিধায়ক স্বপন বাউরি জানান, ঝিলটি শালতোড়া হাইস্কুল সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৩০ হেক্টর জায়গা নিয়ে রয়েছে। সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই ঝিলটি বেহাল হয়ে রয়েছে। ঝিলটির জলধারণ ক্ষমতাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। স্বপনবাবু বলেন, “২০১১ সালে শালতোড়ায় বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারে এসে ক্ষমতায় এলে ওই ঝিলটি সংস্কার করার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এত দিন নানা কারণে তা করা না গেলেও সদ্য জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী ওই ঝিলটি সংস্কার করা হয়েছে কি না জানতে চান।”
স্বপনবাবুর দাবি, কাজ কিছুই হয়নি শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই তিনি সৌমেনবাবুকে ফোন করে দ্রুত কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন।
স্বপনবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চান যত দ্রুত সম্ভব ওই ঝিল সংস্কারের কাজ শেষ হোক। ঝিলটি সংস্কার করা হলে শালতোড়ার জল সঙ্কটের সমস্যা অনেকটাই মিটবে।”
মন্ত্রীর সঙ্গে সার্কিট হাউসে এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী। অরূপবাবু বলেন, “ওই ঝিলটিকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশও লক্ষ্য মুখ্যমন্ত্রীর।”