অচেনা যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের পরিণতিতে কংক্রিটের ‘মমি’ হতে হয়েছিল আকাঙ্ক্ষা শর্মাকে। বাঁকুড়া পুলিশ তদন্তে নেমে তাঁর দেহ উদ্ধার করেছে প্রেমিক উদয়নের ভোপালের বাড়ি থেকে। সেই ঘটনা নিয়ে যখন তোলপাড় সারা দেশে, ফোন-প্রেমিককে বিয়ে করার স্বপ্ন নিয়ে ঘরছাড়া এক নাবালিকাকে উদ্ধার করে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দিল বাঁকুড়া জিআরপি। রবিবারের ঘটনা।
আকাঙ্ক্ষার খুনের ঘটনা নিয়ে উঠে আসছে নানা তথ্য। চলছে ঘটনার মনস্তাত্বিক এবং সমাজতাত্বিক কাটাছেঁড়া। তদন্তে মনে করা হচ্ছে, প্রেমিক উদয়নের সঙ্গে আকাঙ্ক্ষার আলাপ স্যোশাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে। বস্তুত ভার্চুয়াল দুনিয়ায় প্রেমের নামে প্রতারণার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এই পরিস্থিতিতে বাঁকুড়াতেই অচেনা প্রেমিকের জন্য ঘরছাড়া নাবালিকা উদ্ধার হওয়ার ঘটনা নতুন মাত্রা পেয়েছে।
জিআরপি ও বাঁকুড়া চাইল্ড লাইন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম থানা এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালিকা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এ দিন সকালে বাঁকুড়া স্টেশনে তাকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত জিআরপি কর্মীদের। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁরা জানতে পারেন, এক ব্যক্তির সঙ্গে ওই নাবালিকার ফোনে আলাপ হয়। ওই ব্যক্তি কলকাতায় থাকে বলে তাকে জানিয়েছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই নাবালিকাকে হাওড়া চলে আসতে বলে।
ফোন-প্রেমিকের কথায় ভরসা করে শনিবার রাতে বাড়ি ছেড়েছিল ওই নাবালিকা। ট্রেনে চেপে বাঁকুড়াতেও চলে আসে বলে সে জানিয়েছে। কিন্তু সেখানেই ঘটনায় যবনিকা পড়ে। তবে গোটা ঘটনায় বেশ কয়েকটি ব্যাপারে খটকা রয়েছে চাইল্ড লাইনের আধিকারিকদের।
চাইল্ড লাইনের বাঁকুড়ার কো-অর্ডিনেটর সজল শীল বলেন, “ওই নাবালিকা আমাদের সামনে থেকে লোকটিকে ফোন করেছিল। তখন মেয়েটিকে পরের ট্রেন ধরে হাওড়া চলে যেতে বলে সে। কিন্তু আমরা নম্বর নিয়ে যখন ফোন করি, লোকটি মেয়েটিকে চেনেই না বলে দাবি করে।’’ সজলবাবু জানান, এ দিন ওই নাবালিকাকে শিশু কল্যাণ কমিটির বেঞ্চের সামনে পেশ করা হলে তাকে আপাতত হোমে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। নাবালিকার বাড়িতেও খবর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সজলবাবু বলেন, “আমরা ওই নাবালিকার বাড়িতে ফোন করে ঘটনাটি জানিয়েছি। বুধবার তার অভিভাবকদের বাঁকুড়ায় আসতে বলা হয়েছে।”
এই সময়ের মধ্যে ওই নাবালিকাকে কাউন্সেলিং করে তার ফোন-প্রেমিক সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে জানিয়েছেন সজলবাবু।