Suri

গরমের ছুটি এগোনো নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

দুবরাজপুর এলাকার বিভিন্ন স্কুলের একাধিক শিক্ষক বলেন, “২ মে-এর আগে কালবৈশাখী হয়ে তাপমাত্রার বদল ঘটবে কি না, তা তো এখন থেকেই নিশ্চিত বলা সম্ভব নয়।

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৪৪
Share:

নানুরের প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের তরমুজ। নিজস্ব চিত্র

শেষ চৈত্রে তপ্ত দিন আর প্রবল দাবদাহে নাকাল দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি। তাপমাত্রা ৪০-এর কাঁটা ছুঁয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যেই। এই অবস্থায় পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মের ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী ২৪ মে থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুলে গ্রীষ্মাবকাশের নির্ধারিত সময়সূচি এগিয়ে ২ মে করা হয়েছে। পড়ুয়াদের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এই বিষয়ে বীরভূমের স্কুলগুলিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মহলে। অভিভাবকদের মধ্যেও সিদ্ধান্ত নিয়ে দোলাচল রয়েছে। অনেকেরই প্রশ্ন, এত আগে থেকে মে মাসের তাপমাত্রা ভেবে নিয়ে সিদ্ধান্ত না নিলেও চলত।

Advertisement

দুবরাজপুর এলাকার বিভিন্ন স্কুলের একাধিক শিক্ষক বলেন, “২ মে-এর আগে কালবৈশাখী হয়ে তাপমাত্রার বদল ঘটবে কি না, তা তো এখন থেকেই নিশ্চিত বলা সম্ভব নয়। এখন যে তাপপ্রবাহ চলছে, সেটা মাথায় রেখে আগামী কয়েকদিনের পরিস্থিতি নিয়ে ভাবলে হয়ত বেশি ভাল হত।” অন্যদিকে, গরমের হাত থেকে বাঁচতে দুপুরের পঠন-পাঠনকে সকালে নিয়ে আসার পক্ষে সওয়াল করেছেন শিক্ষকদের একাংশ। এবিটিএ-এর বীরভূম জেলা সম্পাদক আশিস বিশ্বাস বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের সুস্থ থাকার বিষয়টি ভেবেই সরকার হয়ত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সরকারকে ভাবতে হবে, প্রতি বছরই এই ধরণের তীব্র দাবদাহের সম্মুখীন হচ্ছি আমরা। সেই পরিস্থিতিতে পঠন-পাঠনটাও তো চালাতে হবে। ছাত্রদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে দু-একটা ক্লাস কম করেও যদি সকালে স্কুল হত, তাহলে দু’দিকই বজায় রাখা যেত।’’

তবে এই ভাবনায় সহমত নন জেলার তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠনের চেয়ারপার্সন প্রলয় নায়েক। তিনি বলেন, “মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে সকাল বেলায় পড়াশোনার ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যা রয়েছে। এক্ষেত্রে পড়াশোনার সময়টা অনেকটাই কমে যায়। পাশাপাশি এই স্তরে পড়ুয়ারা যেহেতু অনেকটা দূর থেকেও পড়তে আসে, ফলে ৬.৩০ থেকে স্কুল চালু করাও সমস্যা আবার ১২টা নাগাদ ছুটি হলে তাদের বাড়ি ফেরার সময় প্রবল তাপের মুখেই পড়তে হবে।” তিনি আরও বলেন, “গরমের জন্য যে নির্দিষ্ট ছুটি, তাকেই এগিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাড়ানো তো হয়নি। যদি মে মাসের শেষের দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়, তাহলে বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে।”

Advertisement

সিউড়ির একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া কৌস্তভ দত্ত ও তার মা কল্পনা দত্ত বলেন, “এই গরমে স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। ছুটি হলে সুবিধাই হবে। কিন্তু লেখাপড়ায় ফাঁকি পড়ে গেলেই সমস্যা। তাই, গৃহশিক্ষকদের উপরেই আরও বেশি করে নির্ভর করতে হবে।” সিউড়ির সুমিত্রা মাল পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁর ছেলেও একটি সরকারি স্কুলের ছাত্র। সুমিত্রার বক্তব্য, “স্কুল খোলা থাকলে ছেলের দুপুরের খাওয়া নিয়ে চিন্তা থাকে না। কিন্তু গরমের জন্য ছুটি লম্বা হয়ে গেলে মিড-ডে মিলও বন্ধ হয়ে যাবে। সকালে লোকের বাড়িতে কাজ করতে যাওয়ার আগে ওর জন্য রান্না করে আসতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন