প্রয়োজন আরও রক্ষী, ক্যামেরা

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু চুরি কাণ্ড ধরিয়ে দিয়েছে রাজ্যে হাসপাতালের নিরাপত্তা কতটা ঠুনকো। সেই ঘটনার রেশ ধরে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা গেল, এখানেও নিরাপত্তার যথেষ্ট খামতি রয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০০:৩৩
Share:

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু চুরি কাণ্ড ধরিয়ে দিয়েছে রাজ্যে হাসপাতালের নিরাপত্তা কতটা ঠুনকো। সেই ঘটনার রেশ ধরে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা গেল, এখানেও নিরাপত্তার যথেষ্ট খামতি রয়ে গিয়েছে। রাখঢাক না করে স্বাস্থ্যকর্তারাও তা মানছেন।

Advertisement

দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম বড় এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সদ্যোজাত সন্তান বদলের অভিযোগ অনেকবার উঠেছে। হাসপাতালের অন্যান্য ওয়ার্ডে নানা কারণে ডাক্তারদের উপর হামলাও কম ঘটে না। এমনই সব ঘটনার পরে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ে এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী হাতে গোনা। স্বাস্থ্যভবন থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যালের গোবিন্দনগর ও লোকপুর ক্যাম্পাসের জন্য নিয়োগ করা হয়েছে ৬০ জন রক্ষী। তিনটি শিফটে ভাগ হয়ে তাঁরা কাজ করেন। ফলে প্রতিটি শিফটে মাত্র ২০ জন করে রক্ষী রয়েছে।

Advertisement

এ ছাড়া কয়েকজন পুলিশও হাসপাতালে রয়েছেন। কিন্তু সব মিলিয়ে সংখ্যাটা এত কম যে প্রতিটি ওয়ার্ডের সামনে রক্ষী মোতায়েন করা যাচ্ছে না। হাসপাতালের কর্তাদের অভিযোগ, পুলিশ কর্মী ও রক্ষীদের মধ্যে অনেক সময় বোঝাপড়ার অভাব থাকে। সেটাও একটা সমস্যা।

নজরদারির জন্য সিসিটিভি-ও পর্যাপ্ত নেই। মেডিক্যালের বহির্বিভাগ, স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি বিভাগ, মূল হাসপাতাল বিল্ডিং এবং লোকপুর ইউনিটে মোট ৬৮টি সিসিটিভি লাগানো রয়েছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরে বাদ দিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঢোকার দরজার সামনে এবং ওয়ার্ডে যাওয়া আসার রাস্তায় সিসিটিভিগুলি বসানো রয়েছে। সব কটি ক্যামেরাই চালু রয়েছে বলে হাসপাতালের কর্তারা দাবি করলেও তা যথেষ্ট নয় বলেই মত তাঁদের।

বিশেষ করে হাসপাতাল চত্বরে সিসিটিভি নেই। এ ছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের একটা বড় অংশই এখনও সিসিটিভি-র নজরের বাইরে। ফলে নিরাপত্তায় যে এখনও কিছু ফাঁক-ফোকর রয়ে গিয়েছে তা মানছেন হাসপাতালের কর্তারা।

সম্প্রতি কলকাতায় স্বাস্থ্যভবনে একটি বৈঠকে হাসপাতালের নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর দাবি তুলে এসেছেন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান।

বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই সব সমস্যা স্বাস্থ্য ভবনের কাছে তুলে ধরেছেন অধ্যক্ষ। তিনি মেডিক্যালে বাড়তি সিসিটিভি ও নিরাপত্তা রক্ষী দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পার্থপ্রতিমবাবু কথায়, “শিশু চুরির মতো ঘটনা রুখতে আমরা তৎপর। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকাঠামো আরও বাড়ানো দরকার। হাসপাতালের সমস্ত জায়গায় ১০০ শতাংশ নজরদারি নিশ্চিত করতে আরও ৫২টি সিসিটিভি চাওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যভবনের কাছে। নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যাও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি।’’

বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভরসায় তাঁরা রোগীদের এখানে রাখেন। কিন্তু নিরাপত্তা সম্পূর্ণ সুনিশ্চিত না হওয়ায় তাঁরাও স্বস্তিতে নেই। কবে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো হয়, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন