বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে বিদায়ী পুরপ্রধান

অসম্পূর্ণ ভবন উদ্বোধন বাঁকুড়ায়

নির্মীয়মাণ একটি ভবন। দোতলার কাজ শুরু হয়েছে। নীচের তলায় কাজ অর্ধেক বাকি। জানলা দরজা কিছুই বসেনি। অথচ ভবনের বাইরে উদ্বোধন ফলক। যেখানে নজর কাড়ছে উদ্বোধক হিসেবে পুরপ্রধানের নাম। উদ্বোধনও হয়েছে গত সপ্তাহে। বাঁকুড়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতাপবাগান পার্কের পাশে নির্মীয়মাণ এই ভবনটিকে তড়িঘড়ি এ ভাবে উদ্বোধন করে দেওয়াকে কেন্দ্র করেই পুরভোটের মুখে শহরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৫ ০১:০৫
Share:

এই অসম্পূর্ণ ভবন ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

নির্মীয়মাণ একটি ভবন। দোতলার কাজ শুরু হয়েছে। নীচের তলায় কাজ অর্ধেক বাকি। জানলা দরজা কিছুই বসেনি। অথচ ভবনের বাইরে উদ্বোধন ফলক। যেখানে নজর কাড়ছে উদ্বোধক হিসেবে পুরপ্রধানের নাম। উদ্বোধনও হয়েছে গত সপ্তাহে। বাঁকুড়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতাপবাগান পার্কের পাশে নির্মীয়মাণ এই ভবনটিকে তড়িঘড়ি এ ভাবে উদ্বোধন করে দেওয়াকে কেন্দ্র করেই পুরভোটের মুখে শহরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

Advertisement

ওই অসম্পূর্ণ ভবনের উদ্বোধন করেছেন বাঁকুড়ার বিদায়ী পুরপ্রধান, তৃণমূলের শম্পা দরিপা। পুরভোটের মুখে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই সময়ের আগে এ ভাবে ভবনটিকে উদ্বোধন করে দেওয়া হল বলে অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। বাঁকুড়া পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী সিপিএম কাউন্সিলর স্বরূপ সেন বলেন, “ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলে তা-ও মানা যেত। ভবনের কাজ শেষ হতে এখনও ঢের বাকি। মানুষের জন্য কবে এই ভবন খুলে দেওয়া সম্ভব, তা এখনও কেউ বলতে পারবে না। অথচ এর মধ্যে উদ্বোধনও হয়ে গেল!” সিপিএমের বাঁকুড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রতীপ মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “বিদায়ী পুরপ্রধান সরকারি খরচেই গোটা ওয়ার্ড জুড়ে ফলক লিখন করিয়ে রেখেছেন। কাজেই ওঁর আর দেওয়াল লিখন প্রয়োজন হবে না। প্রতাপবাগানের পাশে হয়তো একটা ফলক প্রয়োজন ছিল। তাই অসম্পূর্ণ ভবনটিকে উদ্বোধন করে সেই কাজটাও সেরে ফেলেছেন।” শম্পাদেবীর অবশ্য যুক্তি, ভবনটি উদ্বোধন না করলে পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাওয়ার পরে বিধি অনুযায়ী নির্মাণকাজ বন্ধ করে রাখতে হত। তখন কাজ শেষ হতে আরও দেরি হত। তাই আগেই উদ্বোধন করে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতাপবাগান পার্কের পাশে এই ভবনটিকে সভাকক্ষ ও বিয়ের অনুষ্ঠানে ভাড়া দেওয়ার জন্য গড়ে তুলতে চলেছে পুরসভা। শম্পাদেবী জানান, এই ভবনটির জন্য পুরসভা ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ভবনটির নির্মাণ সামগ্রী পুরসভা নিজেই কিনে দিচ্ছে। ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, এই ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ২০০০-২০০৫ তৃণমূলের পুরবোর্ডের আমলেই এই জায়গায় একটি কমিউনিটি হল গড়ার কথা ঠিক হয়েছিল। সেই সময় পুরপ্রধান ছিলেন দেবপ্রসাদ (তারা) কুণ্ডু। তবে ওই জায়গাটিতে বৈষ্ণবদের সমাধিস্থল থাকায় ভবন গড়ায় আপত্তি ওঠায় পুরসভা ওখানে ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। পরবর্র্তীকালে শম্পাদেবী যখন ওই জায়গাতে ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন, তখনও আপত্তি ওঠে। যদিও পুরসভা নির্মাণকাজ চালিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে খবর, প্রথমে ওই ভবনটিকে মার্কেট কমপ্লেক্স হিসবে গড়ে তোলার কথাবার্তা চলছিল। শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত বাতিল হয়ে যায়। শম্পাদেবী বলেন, “একটি সংস্থা ওখানে শপিং মল গড়ে তোলার জন্য যে পরিকাঠামো চাইছে, তাতে আরও অনেক বেশি জায়গার প্রয়োজন। সেই পরিকাঠামো না থাকাতেই ভবনটিতে সভাকক্ষ ও বিয়ের অনুষ্ঠানের হল তৈরি করা হচ্ছে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অবশ্য বিয়ের অনুষ্ঠানের হল তৈরি নিয়েও আপত্তি আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন