প্রতীকী ছবি।
জেলা সম্পাদক থেকে সদ্য তিনি জেলা সভাপতি হয়েছিলেন। জেলা সম্মেলনের তিন দিন পার হতেই ফরওয়ার্ড ব্লকের পুরুলিয়ার সেই প্রাক্তন সাংসদ নরহরি মাহাতো বিজেপিতে যোগ দিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি কলকাতায় বিজেপির এক নেতার এলগিন রোডের বাড়িতে গিয়ে দলবদল করেন।
ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কিছু দিন আগেই পুরুলিয়ায় জেলা সম্মেলনে নরহরিবাবু জেলা সভাপতি হয়েছেন। তাঁর যদি বিজেপিতে যাওয়ার ইচ্ছা মনে মনে ছিলই, তাহলে তিনি স্বেচ্ছায় ওই পদ তখনই ছেড়ে দিতে পারতেন। এই সৎসাহস যাঁর নেই, তিনি আর কী ভাবে মানুষের ভাল করবেন?’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অসীম সিংহ অভিযোগ করেন, ‘‘সাংসদ হওয়ার বাসনাতেই তিনি বিজেপিতে গেলেন। আদর্শচ্যুত হয়ে নিজের স্বার্থে যাঁরা দলবদল করে, তাঁদের জন্য দলের কোনও ক্ষতি হয় না।’’
নরহরিবাবু অবশ্য কলকাতায় দাবি করেন, ‘‘রাজ্যে বাম ও কংগ্রেস ক্ষয়িষ্ণু। এক মাত্র বিজেপিই প্রকৃত বিরোধী শক্তি। তাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতেই বিজেপিতে এসেছি।’’ তিনি এও দাবি করেন, ‘‘ভোটে দাঁড়ানোর জন্য বিজেপিতে যোগ দিইনি। তবে দল চাইলে নিশ্চয় প্রার্থী হব। দল অন্য কাউকে প্রার্থী করলে তাঁকে জেতাতে লড়াই করব।’’
২০০৬ সালে উপনির্বাচনে নরহরিবাবু প্রথম সাংসদ হন। ২০০৯ সালে তিনি জেতেন। ২০১৪ সালে অবশ্য তৃণমূলের মৃগাঙ্ক মাহাতোর কাছে পরাজিত হন। তিনি দলের জেলা সম্পাদক ছিলেন টানা ১২ বছর।
বেশ কিছুদিন ধরেই জেলার রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষো চলছিল, নরহরিবাবু বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘‘নরহরিবাবু যে তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, সে খবর আমাদের কাছে ছিলই। এত দিন দলে সাংগঠনিক কাজকর্মে যে ভূমিকায় তাঁকে দেখা গিয়েছে, ইদানীং সে ভাবে তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। ফলে সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। এমনকী ঝাড়খণ্ডের একটি অতিথি নিবাসে কিছু দিন আগে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এক নেতার সঙ্গে দেখাও করেন বলে খবর।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘নরহরিবাবু কিছু দিন ধরেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। তবে তিনি দলে না আসায় আমরা তা প্রকাশ্যে আনিনি। তাঁর এই যোগদানে প্রমাণিত হল, বিজেপিই এখন রাজ্যে প্রকৃত বিরোধী শক্তি।’’ এ দিকে, এই দলবদলের প্রেক্ষিতে আজ শুক্রবার, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদকমণ্ডলী বৈঠকে বসছে।