মত স্বাস্থ্য-কর্তাদের

নয়া মাতৃত্ব যোজনায় লাভই

লক্ষ্য মাতৃত্ব সুরক্ষিত করা। সেই সঙ্গে মা ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো। সেই লক্ষ্যে রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি বীরভূমেও শুরু হতে চলেছে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প— ‘প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব যোজনা’। বিনামূল্যে সন্তানসম্ভবাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসাই এই যোজনার মূলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০০:৫৩
Share:

লক্ষ্য মাতৃত্ব সুরক্ষিত করা। সেই সঙ্গে মা ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো।

Advertisement

সেই লক্ষ্যে রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি বীরভূমেও শুরু হতে চলেছে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প— ‘প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব যোজনা’। বিনামূল্যে সন্তানসম্ভবাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসাই এই যোজনার মূলে। আগামি ৯ অগস্ট ওই যোজনা শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এখন থেকে প্রতি মাসের ওই নির্দিষ্ট দিনেই সম্ভাব্য মায়েদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হবে।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা হিমাদ্রি আড়ি জানিয়েছেন, সিউড়ি ও রামপুরহাট জেলা হাসপাতাল এবং বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল তার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তৈরি থাকতে বলা হয়েছে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, ল্যাব টেকনিশিয়ানদের। স্বাস্থ্য কেমন জানতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ওই দিনই বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থাও করা। মা ও শিশুদের সুরক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই জননী শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। তার পরেও নতুন এই যোজনার উদ্দেশ্য সন্তান জন্ম দেওয়ার আগেই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার আওতায় এনে মাতৃত্ব সুরক্ষিত করা এবং নিরাপদ প্রসবের সম্ভবানা বাড়ানো।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, প্রতিমাসের নির্দিষ্ট দিনটিতে নির্ধারিত হাসপাতালগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা পৌঁছলে রোগ নির্ণয়ের জন্য যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষা বিনা পয়সায় হবে। আল্ট্রাসোনোগ্রাফিই থেকে রক্তের পরীক্ষা, সঙ্গে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের চিকিৎসা, ওষুধপত্র, গর্ভাবস্থায় কী কী নিয়ম মেনে চলা উচিত— সে বিষয়ে মূল্যবান পরামর্শও মিলবে। নিয়মিত চিকিৎসায় থাকলে এক জন সম্ভাব্য মা, তিনি যদি আগে থেকে কোনও রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তিনিও সুস্থ থাকবেন। প্রকল্পটি মূলত গ্রামের এবং অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা দেশের অন্তঃসত্ত্বাদের কথা ভেবেই তৈরি।

স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এক জন অন্তঃসত্ত্বা গর্ভবতী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের রোগের উপসর্গ বাড়ে। মহিলা আগে থেকেই কোনও বিশেষ ধরনের রোগের শিকার হয়ে থাকতে পারেন। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, হাই ব্লাডসুগার, রক্তাল্পতা এবং দেহে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো নানা ধরনের রোগ থাকতে পারে। সমস্যা হল, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে এক জন মহিলা স্থানীয় উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেজিস্ট্রেশন করালেও তাঁর শরীরে কী সমস্যা, উপযুক্ত পরীক্ষার অভাবে তা সব সময় জানা সম্ভব হয় না। এমন অনেক মহিলা রয়েছেন, রেজিস্ট্রেশনটুকু হওয়ার পরে কোনও সমস্যা হলেও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীবা স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছন না। এর ফলে প্রসবকালীন জটিলতা বৃদ্ধি পায়। এতে মা ও শিশু উভয়েরই মৃত্যু ঘটতে পারে।

হিমাদ্রি বলছেন, ‘‘এমন বহু মহিলা রয়েছেন, গর্ভধারণ থেকে প্রসব— কোনও সময়ই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সুযোগও পান না। প্রকল্পটির উপযোগিতা সেখানেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন