নিরাপত্তা বাড়াতে বাঁশি-ঘণ্টা 

সোমবার রাতে ওই ব্যাঙ্কের বারান্দায় থাকা কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়রদের তৎপরতায় ব্যাঙ্কে ডাকাতির চেষ্টা বানচাল হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মানবাজার শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাঁশি বাজিয়ে এবং ঘণ্টা বাজিয়ে এবার সতর্কবার্তা দেবে নৈশপ্রহরীরা। সেই কারণে বাড়ানো হয়েছে তাঁদের সংখ্যা।

Advertisement

সোমবার রাতে মানবাজারে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় লুটের চেষ্টা চালিয়েছিল একদল দুষ্কৃতী। ব্যাঙ্কের পিছনে রয়েছে মানবাজার গার্লস হাইস্কুল। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলের রাস্তা দিয়েই ব্যাঙ্কে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার থেকেই স্কুলে রাতের রক্ষীদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সন্দেহজনক কিছু দেখলেই বাঁশি বাজিয়ে এবং ঘণ্টা বাজিয়ে সতর্কবার্তা পাঠাবেন নৈশপ্রহরীরা। এতে স্কুলের নিরাপত্তার ব্যাঙ্কের নিরাপত্তাও খানিকটা মজবুত হবে বলে মনে করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

সোমবার রাতে ওই ব্যাঙ্কের বারান্দায় থাকা কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়রদের তৎপরতায় ব্যাঙ্কে ডাকাতির চেষ্টা বানচাল হয়েছিল। মঙ্গলবার তদন্তে গিয়ে পুলিশ ও ব্যাঙ্ককর্তারা দেখেছিলেন, দুষ্কৃতীরা ব্যাঙ্কের পিছন দিকের পাঁচিল টপকে ঢুকেছিল। ব্যাঙ্কের পিছনের স্কুলের রাস্তা ধরেই দুষ্কৃতী ব্যাঙ্ক চত্বরে ঢুকেছিল বলে অনুমান পুলিশের। সিভিক ভলান্টিয়রেরা টের পেয়েছে বুঝতে পেরে ওই রাস্তা দিয়েই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দুষ্কৃতীদের খোঁজ পায়নি পুলিশ। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’

Advertisement

মানবাজার গার্লস হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোজ মুখোপাধ্যায় বুধবার বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের পিছনেই আমাদের স্কুল। ছাত্রীদের দু’টি হস্টেলও রয়েছে। সেখানে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন আছে। তবে সোমবার রাতের ঘটনার পর নিরাপত্তাররক্ষীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ওদের আরো সতর্ক থাকতে বলেছি। এমনকি, প্রতি ঘন্টায় বাঁশি বাজিয়ে ঘণ্টা পিটিয়ে ওদের সতর্কবার্তা পাঠাতে বলেছি। মনে হয় এতে স্কুলের নিরাপত্তার পাশাপাশি ব্যাঙ্কের নিরাপত্তাও অনেকটা বাড়বে।’’

জেলার এক পদস্থ পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘দুষ্কৃতী ব্যাঙ্ক লুট করতে পারেনি। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে বলে ব্যাঙ্কের নিরাপত্তায় যাতে ঢিলেমি না থাকে তার জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’ জেলা পুলিশ সুত্রের খবর, জেলায় ব্যাঙ্কগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ব্যাঙ্কগুলির কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয় মঙ্গলবার। জেলার ‘লিড ব্যাঙ্কে’র এক কর্তা শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘সোমবারের রাতের ঘটনার পর আমরা বিভিন্ন ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।’’

সোমবূার রাতে যে ব্যাঙ্কে লুটের চেষ্টা হয়েছিল, মঙ্গলবার সেখানে তদন্তে গিয়েছিলেন ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা বিষয়ক আধিকারিক এবং পুলিশকর্তারা। মঙ্গলবার ব্যাঙ্কের ওই শাখায় লেনদেন বন্ধ ছিল। গ্রাহকদের পরিস্থিতির কথা বোঝানো হয়। তবে এদিন ব্যাঙ্কের পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল।

মানবাজার-পুরুলিয়া রাস্তায় এই রকম একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখা যায়, ওই শাখার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকেরা। গ্রাহকরা কোন রাস্তা দিয়ে ঢোকেন, ব্যাঙ্কে ঢোকার অন্য কোন রাস্তা রয়েছে কি না, লেনদেনের সময় ক্যাশিয়ার নিরাপদ দূরত্বে থাকেন কিনা, এমন বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হয়। লেনদেনের সময় ক্যাশিয়ারের কাউন্টার তালা বন্ধ থাকে কি না, তার খোঁজ নেন আধিকারিকেরা।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন ) ধৃতিমান সরকার বলেন, যে সিভিক ভলান্টিয়রদের তৎপরতায় ব্যাঙ্ক লুট ঠেকানো গিয়েছে, তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন