মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় জট কাটল জয়দেবে

অবশেষে আশ্রম কমিটির সিদ্ধান্ত এবং ঠিক করা মূল্য মেনেই, জয়দেব মেলায় স্টল বিলির ব্যবস্থা করল প্রশাসন।তাই জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত বর্গ ফুট পিছু এক টাকার পরিবর্তে, আশ্রম কমিটির ঠিক করা মূল্যেই মেলায় স্টল দিচ্ছেন শতাধিক বড় এবং মাঝারি আশ্রম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইলামবাজার শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share:

বসতে শুরু করেছে মেলার স্টল। নিজস্ব চিত্র।

অবশেষে আশ্রম কমিটির সিদ্ধান্ত এবং ঠিক করা মূল্য মেনেই, জয়দেব মেলায় স্টল বিলির ব্যবস্থা করল প্রশাসন।

Advertisement

তাই জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত বর্গ ফুট পিছু এক টাকার পরিবর্তে, আশ্রম কমিটির ঠিক করা মূল্যেই মেলায় স্টল দিচ্ছেন শতাধিক বড় এবং মাঝারি আশ্রম। জয়দেব আশ্রম কমিটির নতুন সভাপতি পরিতোষ চক্রবর্তী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামোন্নয়ন পর্ষদের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মাধ্যমে জয়দেব মেলায় স্টল দেওয়া নিয়ে সমস্যার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ছোট আশ্রমকে কোনও টাকা দিতে হচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে, বড় এবং মাঝারি আশ্রমের জন্য যথাক্রমে ২ হাজার এবং ১ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে। মেলায় স্টল বিলির কাজ প্রায় শেষ লগ্নে।”

এইবারের জয়দেব মেলায় স্টল দেওয়ার জন্য বর্গ ফুট পিছু একটাকা ধার্য করেছিল জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের ধার্য করা ‘স্বল্পমূল্যে’, স্টল দেওয়ার জন্য প্রথম থেকেই বেঁকে বসে জয়দেব আশ্রম কমিটি। কমিটির দাবি, ৩০ এবং ৪০ হাজার বর্গ ফুট এলাকা নিয়ে স্টল দিচ্ছে বহু আশ্রম। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে মেলায় স্টল দেওয়া সম্ভবপর হবে না বলেই কমিটির আলোচনায় উঠে আসে। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে, সভাপতির পদ থেকে সরেও দাঁড়ান শিবনারায়ণ সাহা।

Advertisement

অস্থায়ী ভাবে কমিটি গঠন করা এবং আশ্রম কমিটির দাবি নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পশ্চিমবঙ্গ গ্রামোন্নয়ন পর্ষদের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দ্বারস্থ হয় কমিটি। অনুব্রতের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হয়। ২৩ ডিসেম্বর নতুন আশ্রম কমিটি গঠন হয়। পরিতোষ বাবু হন কমিটির সভাপতি। জেলা সফরে তথা জয়দেব বাউল ও লোক উৎসবের উদ্বোধনের দিন সাতেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সম্পূর্ণ বিনামুল্যে ছোট আশ্রমকে স্টল দেওয়ার কথা ঘোষণা করে কমিটি। পাশাপাশি আশ্রম কমিটির নির্ধারিত বড় এবং মাঝারি আশ্রমের জন্য যথাক্রমে ২ হাজার এবং ১ হাজার টাকার বিনিময়ে স্টল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। স্থানীয় পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে দিন সাতেক আগেই বৈঠক করে এমন সিদ্ধান্ত নিল জয়দেবের আশ্রম কমিটি।

জানা গিয়েছে, জয়দেব মেলার সার্বিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে মাস দু’য়েক আগে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সব স্তরকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ‘স্বল্প মূল্যে’ আশ্রমগুলিকে স্টল বণ্টনের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে আশ্রমের জন্য অন্যান্য খরচ হিসেবে বিদ্যুৎ, প্যান্ডেল খরচ দেওয়ার কথা হলেও, স্টল বুকিং করার জন্য কোনও টাকা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ হিসাবে, ওই কমিটির দাবি ছিল চেয়ে চিন্তে আশ্রমের লোকজন মেলায় সেবা দেন। সেক্ষেত্রে স্টলের জন্য এত টাকা দেওয়া সম্ভবপর নয়। আশ্রম কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২৬০ মতো রয়েছে বড় এবং মাঝারি আশ্রম। আবার গোটা পঞ্চাশেক ছোট আশ্রম হয় জয়দেব মেলায়। আশ্রম কমিটির মুখ্য উপদেস্টা আপু লায়েক বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে বিশুদ্ধ পানীয় জল পাইলাইনে সরবরাহ হচ্ছে। দমকলের মাশুল লাগছে না। তবে বিদ্যুতের মাশুল কম করা নিয়েও আমরা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহলে আর্জি জানিয়েছি।”

নির্মল পঞ্চায়েত হিসেবে আগেই ঘোষণা হয়েছে জয়দেব পঞ্চায়েত। আর তাই স্থানীয় পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের পাশাপাশি আশ্রম কমিটিও পর্যাপ্ত পরিমাণে অস্থায়ী শৌচকর্মের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই মেলা উপলক্ষে একধিক দোকানদার হাজির জয়দেবে। পৌষ সংক্রান্তির দিন থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে মেলা বসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন