বরখাস্তকে ফের কাজ, শুরু বিতর্ক

সম্প্রতি পরিদর্শনে গিয়ে সেই কর্মীকে কাজ করতে দেখে চটে যান জেলা গ্রামোন্নয়ন শাখার আধিকারিকেরা। তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, নিয়ম ভেঙে অন্য তহবিল থেকে ওই কর্মীকে ইতিমধ্যে বেতন দেওয়া-সহ নানা ক্ষেত্রে লক্ষাধিক টাকা খরচ করা হয়েছে। সে জন্য অবিলম্বে লক্ষাধিক টাকা ব্লক প্রশাসনকে ওই তহবিলে ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:১০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

জেলা প্রশাসনের বরখাস্ত করা কর্মীকে পুনরায় কাজ দেওয়ার অভিযোগ উঠল আড়শা ব্লক প্রশাসনের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি পরিদর্শনে গিয়ে সেই কর্মীকে কাজ করতে দেখে চটে যান জেলা গ্রামোন্নয়ন শাখার আধিকারিকেরা। তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, নিয়ম ভেঙে অন্য তহবিল থেকে ওই কর্মীকে ইতিমধ্যে বেতন দেওয়া-সহ নানা ক্ষেত্রে লক্ষাধিক টাকা খরচ করা হয়েছে। সে জন্য অবিলম্বে লক্ষাধিক টাকা ব্লক প্রশাসনকে ওই তহবিলে ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হল।

Advertisement

জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তিকে চুক্তির ভিত্তিতে ডিএলটি (ডিস্ট্রিক্ট লেভেল ট্রেনার) পদে আড়শা ব্লকে কাজ দেওয়া হয়েছিল। ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের স্বনির্ভর দল, সংসদ এলাকার উপসঙ্ঘ প্রভৃতিকে কাজ করার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল করা, প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রভৃতি কাজ করতে হয় ডিএলটি-কে। কিন্তু ওই কর্মীর বিরুদ্ধে বছর খানেক আগে স্বনির্ভর দলগুলির কাছ থেকে নানা রকম অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে জেলা গ্রামোন্নয়ন শাখা।

জেলা স্বনির্ভর দল ও স্বনির্ভর গোষ্ঠী বিষয়ক দফতরের সদ্য বিদায়ী আধিকারিক অমল আচার্য বলেন, ‘‘অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ওই কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি আড়শার বিডিও-কে জানানোও হয়। তাঁকে যে আর এই কাজে লাগানো যাবে না, সেকথাও জানিয়ে দেওয়া হয়।’’

Advertisement

কিন্তু অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে জেলা গ্রামোন্নয়ন শাখার আধিকারিকেরা আড়শা ব্লকের স্বনির্ভর দলের কাজ কেমন চলছে তা পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন বহাল তবিয়তে সেই ব্যক্তিই ফের ওই কাজ দেখভাল করছেন। দফতর সূত্রে খবর, তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে ওই ব্যক্তিকেই ব্লক প্রশাসন ফের কাজে লাগিয়েছে। অথচ পুনর্নিয়োগ করার জন্য জেলা গ্রামোন্নয়ন শাখার কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। জেলা গ্রামোন্নয়ন শাখা ব্লকগুলিতে বিভিন্ন স্বনির্ভর দলের সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করে, সেই তহবিল থেকেই এই কর্মীর বেতন দেওয়া হয়েছে। অমলবাবু বলেন, ‘‘দলের সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়, সেই টাকা কোনও কর্মীকে বেতন হিসেবে দেওয়া যায় না। ওই কর্মীকে সরিয়ে দেওয়ার পরে ব্লক প্রশাসন ফের কাজে লাগিয়েও নিয়ম ভেঙেছে।

জেলা গ্রামোন্নয়ন শাখার প্রকল্প অধিকর্তা সুভাষচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই কর্মীকে যে টাকা বেতন বাবদ দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকা ব্লক প্রশাসনকে ফেরত দিতে আড়শার বিডিও-কে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিডিও (আড়শা) অমিত গায়েন বলেন, ‘‘আমি সবে দায়িত্ব নিয়েছি। ওই ব্যক্তির নিয়োগ নিয়েও কিছু জানি না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেমন নির্দেশ দেবেন, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করব।’’ আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৌশল্যা সহিস বলেন, ‘‘আমি দায়িত্ব নেওয়া থেকে ওই কর্মীকেই স্বনির্ভর দলের কাজ করতে দেখছি। তবে বিধি বহির্ভূত ভাবে টাকা তোলা হলে তা ফেরত তো দিতেই হবে।’’ কিন্তু সরকারি টাকা থেকে তার খেসারত কেন দিতে হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের অন্দরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন