আবেদনে টাকা দাবি, অভিযোগ

এক ব্যক্তি সম্প্রতি মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন, শ্রম দফতরে খোঁজ নিতে গেলে সেই আবেদন করার জন্য তাঁর থেকে সাতশো টাকা চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১৪
Share:

সরকারি অনুদান পেতে গেলে দিতে হবে ঘুষ! প্রতীকী ছবি

সরকারি অনুদান পেতে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। বিষ্ণুপুর শহরের গোপালগঞ্জ সাহাপাড়ার এক ব্যক্তি সম্প্রতি মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন, শ্রম দফতরে খোঁজ নিতে গেলে সেই আবেদন করার জন্য তাঁর থেকে সাতশো টাকা চাওয়া হয়েছে। পুরো টাকা দিতে না পারায় কাজও হয়নি। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

রাজ্য সরকার অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য ‘সামাজিক সুরক্ষা যোজনা’ চালু করেছে। ওই প্রকল্পে প্রতি মাসে শ্রমিকেরা ২৫ টাকা করে জমা করেন। সরকার দেয় ৩০ টাকা। ষাট বছর হলে সুদে-আসলে সেই টাকা ফেরত পান তাঁরা। আর এই যোজনার কার্ড যাঁদের রয়েছে, তাঁদের সর্বাধিক দু’জন সন্তান পড়াশোনার জন্য অনুদান পায়। বিষ্ণুপুর শহরের মুরগি বিক্রেতা রিন্টু সাহা এই যোজনার আওতায় রয়েছেন। তাঁর ছেলে একাদশ শ্রেণির ছাত্র। নিয়ম মতো তার এককালীন চার হাজার টাকা পাওয়ার কথা।

রিন্টুর দাবি, মাস কয়েক আগে এই ব্যাপারে খোঁজ নিতে শ্রম দফতরে গিয়েছিলেন। সেখানে ছিলেন এক জন ‘সেলফ লেবার অর্গানাইজার’ (এসএলও)। রিন্টু বলেন, ‘‘অনলাইনে আবেদন করতে হবে বলে ওই কর্মী আমার থেকে সাতশো টাকা চান। আমি দু’শো টাকা দিতে পেরেছিলাম। কাজটা হয়নি।’’ মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জমা করেন রিন্টু। তাঁর দাবি, ‘‘কয়েক দিন বাদে ফের শ্রম দফতরে গিয়েছিলাম। সে দিন আমাকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেন কর্মীরা। আমি চাই, নিজের প্রাপ্য থেকে ছেলেটা যেন বঞ্চিত না হয়।’’

Advertisement

তবে ওই এসএলও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাইরের কম্পিউটার থেকে আপলোড করতে গেলে কিছু খরচ হবে। সেটাই বলেছিলাম। আমাদের কাজ উপভোক্তার থেকে মাসোহারা ২৫ টাকা সংগ্রহ করা। তথ্য আপলোড করা নয়।” মহকুমার সহকারী শ্রম আধিকারিক তাপসকুমার সিংহরায় জানাচ্ছেন, উপভোক্তাদের থেকে ২৫ টাকা সংগ্রহ করে নিয়ে আসার জন্য কমিশনের ভিত্তিতে শ্রম দফতর এসএলও-দের নিয়োগ করে। তিনি বলেন, ‘‘আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি, কে টাকা নিয়ে তথ্য আপলোডের কথা বলেছে। অফিসের নাম করে টাকা নেওয়া অপরাধ। তাই সবাইকে সাবধান করে দেব।”

তাপসবাবু জানান, সন্তানের পড়াশোনার অনুদান পেতে যোজনার উপভোক্তাদের ‘বেনিফিট পোর্টাল’-এ অনলাইন আবেদন করতে হচ্ছে। সেই কাজ ইন্টারনেট-সংযোগ যুক্ত যে কোনও কম্পিউটার থেকে করা যেতে পারে। উপভোক্তারা কোনও ‘সাইবার ক্যাফে’ বা তথ্যমিত্র কেন্দ্রে যেতে পারেন। রিন্টুর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘উনি আমার কাছে এসে ফর্ম জমা করলে, আমি এজেন্সিকে দিয়ে দায়িত্ব নিয়ে আবেদন করিয়ে দেব। কোনও খরচ হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন