ইউএসজি সেন্টারে অভিযান

 আল্ট্রাসোনোগ্রাফি (ইউএসজি) হচ্ছে। তবে কেন ওই পরীক্ষা করতে হচ্ছে, উল্লেখ নেই তার। কোন ডাক্তার পরীক্ষা করলেন, অনেক ক্ষেত্রে লেখা থাকছে না সেটাও। নিয়ম মেনে ইউএসজি করা হচ্ছে কি না— নার্সিং হোমে তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে এমন বেশ কিছু অনিয়ম নজরে পড়ল প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৬:৪০
Share:

সরেজমিন: বাঁকুড়ার একটি নার্সিংহোমে প্রশাসনের কর্তারা। নিজস্ব চিত্র

আল্ট্রাসোনোগ্রাফি (ইউএসজি) হচ্ছে। তবে কেন ওই পরীক্ষা করতে হচ্ছে, উল্লেখ নেই তার। কোন ডাক্তার পরীক্ষা করলেন, অনেক ক্ষেত্রে লেখা থাকছে না সেটাও। নিয়ম মেনে ইউএসজি করা হচ্ছে কি না— নার্সিং হোমে তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে এমন বেশ কিছু অনিয়ম নজরে পড়ল প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের।

Advertisement

কন্যাভ্রুণ হত্যা বিরোধী অভিযানে নেমে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) নবকুমার বর্মন ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূণকুমার দাসের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল শহরের কাটজুড়িডাঙার একটি নার্সিংহোম পরিদর্শনে যায়। নার্সিংহোমের ইউএসজি সেন্টার ও নথিপত্র খুঁটিয়ে পরিদর্শন করেন তাঁরা। নবকুমারবাবু বলেন, “রোগীদের কেন ইউএসজি করা হচ্ছে তার উল্লেখ থাকছে না রেজিস্ট্রেশনে। কারা পরীক্ষা করছেন বা রোগীর সমস্যাটা কী, সেই সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত থাকার কথা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নেই।” প্রসূণবাবু বলেন, “যে সব অনিয়ম আমাদের নজরে এসেছে সেগুলি আমরা নার্সিংহোমের কর্তাদের জানিয়েছি। দ্রুত যাতে শুধরে নেওয়া হয় তার নির্দেশও দিয়েছি।” তিনি জানান, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে বিষয়টি নিয়ে শো-কজও করা হবে। ওই নার্সিং হোমের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা নিয়মকানুন মেনেই কাজ করছি। স্বাস্থ্য দফতরের নজরে কোনও অনিয়ম উঠে আসলে শুধরে নেওয়া হবে।”

বাঁকুড়ার বিভিন্ন ক্লিনিকেই ইউএসজি করা হয়। তবে সঠিক পদ্ধতিতে মেনে অনেক জায়গাতেই কাজ করা হয় না বলে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে। সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ না মিললেও বেশ কিছু জায়গায় গর্ভবতীরা ইউএসজি-র মাধ্যমে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করান বলেও শোনা যায়।

Advertisement

সম্প্রতি বাঁকুড়া শহরের কেন্দুয়াডিহি এলাকার একটি ইউএসজি সেন্টারে সারেঙ্গা ব্লকের এক অন্তঃসত্ত্বা বধূ পরীক্ষা করাতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, তাঁকে সেখানে ধর্ষণ করা হয়। পরে স্বাস্থ্য দফতরের তদন্তে উঠে আসে, ওই ইউএসজি সেন্টারটির লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, এক ডাক্তারের নাম করে ওই সেন্টারে ইউএসজি করতেন মালিক নিজেই।

ওই ঘটনার পরেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের টনক নড়েছিল। নবকুমারবাবু বলেন, “নিয়ম ভেঙে বহু ইউএসজি সেন্টার চলানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরাও নিজেদের চেম্বারে স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি না নিয়েই ইউএসজি করছেন।’’ তিনি জানান, বেআইনি ভাবে জেলা জুড়ে চলতে থাকা ইউএসজি সেন্টারগুলি বন্ধ করাই আপাতত প্রশাসনের লক্ষ্য। নিজদের এলাকায় নিয়মিত সেন্টারগুলিতে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য জেলার তিন মহকুমাশাসককেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement