প্রতীকী ছবি।
আধুনিক হতে হবে চাষিদেরও। হাতে লেখা আবেদনপত্র আর নয়। এ বার থেকে আবেদন করতে হবে অনলাইনে। ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার সুযোগ পেতে এ বার থেকে তেমনই নিয়ম।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত বছরের মতো এ বারও ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে দুটি প্রকল্পে প্রায় চার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ও উপযুক্ত নথিপত্র-সহ আগে যে ভাবে আবেদন করতে হত, সে সব একই থাকছে। বদলেছে শুধু পদ্ধতিটাই। আধার নম্বর দিয়ে আবেদন করতে হবে। থাকতে হবে কেসিসি বা কিসান ক্রেডিট কার্ড। স্বচ্ছতা আনতেই এই পদ্ধতি।
জেলা সহ কৃষি আধিকর্তা (শষ্য সুরক্ষা) অরিন্দম চক্রবর্তী এবং জেলা সহ কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) অমর মণ্ডলরা জানাচ্ছেন, এর সময়সীমা শুরু হয়েছে ১০ অক্টোবর অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে। চলবে
৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। যে সব চাষি সুযোগ নিতে আগ্রহী, তাঁরা সময়সীমার মধ্যে নির্দিষ্ট সাইটে (www. matirkatha.net) গিয়ে লগ ইন করতে পারেন। স্মার্টফোনে ওই অ্যাপ ডাউনলোড করেও আবেদন করা যাবে।
অসুবিধা হলে ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে
তিনিই সাহায্য করবেন।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি প্রকল্প, ‘ফাইনান্সিয়াল সাপোর্ট স্কিম ফর ফার্ম মেকানাইজেশন’ সংক্ষেপ এফএসএসএম-এ ৩ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা এসে গিয়েছে। জেলার ১৯টি ব্লকের চাষিরা ৫০ শতাংশ এবং সর্বাধিক ২ লক্ষ টাকা ভর্তুকিতে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, পাম্পসেট, পাওয়ার রিপার (ফসল কাটার যন্ত্র) ,পাওয়ার স্প্রেয়ার ও জিরোটিলেজের মতো ভারী কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে পারবেন।
কৃষি দফতর জানিয়েছে কী ভাবে যন্ত্র কিনতে আগ্রহী চাষি উপযুক্ত নথি সহকারে অনলাইনে আবেদন করবেন। আবেদন মঞ্জুর হলে ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই সেই যন্ত্র কিনতে পারবেন। প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া যাবে। ভর্তুকির টাকাও ব্যাঙ্কে জমা হবে। হাতে টাকা পাবেন না চাষি। অনুমোদিত কৃষি যন্ত্রপাতি বিক্রয়কেন্দ্রকে টাকা দেবে ব্যাঙ্কই।
জেলা কৃষি আধিকারিকরা বলছেন, ‘‘কমপক্ষে পাঁচ হাজার চাষি এতে উপকৃত হবেন।’’
এ ছাড়া হ্যান্ড স্প্রেয়ার, ধান ঝাড়াই মেশিন, ড্রাম সিডার (বীজ বোনা যন্ত্র), কুনইডার (আগাছা পরিস্কারের যন্ত্র) এমনকী কাস্তে-হাল-কোদালের মতো ছোট যন্ত্রপাতি ভর্তুকিতে কেনার জন্য আর একটি পৃথক সরকারি প্রকল্পে ৪৫ লক্ষ টাকা এসেছে। এক্ষেত্রে ভর্তুকির পরিমাণ ৭০০ থেকে সর্বাধিক সাড়ে ৩ হাজার টাকা। তবে এক্ষেত্রে কিসান ক্রেডিট কার্ড আবশ্যিক নয়। তবে থাকলে অগ্রাধিকার পাবেন।
জেলা কৃষি দফতর জানাচ্ছে, উপরের দুটি প্রকল্প ছাড়াও অনেক চাষির উপকারে লাগে এমন উদ্যোগ ভারী কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া দেওয়ার কেন্দ্র বা ‘কাস্টম হায়ারিং সেন্টার’ গড়ে তুলতে একই ভাবে ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কোনও সমবায় বা ফার্মার্স গ্রুপ আগ্রহী থাকলে ভর্তুকির পরিমাণ জেলার জন্য সর্বাধিক ৬০ লক্ষ টাকা। আবেদনের সময়সীমা ও পদ্ধতি একই।
কিন্তু, একটা প্রশ্ন থাকছেই। প্রগতিশীল বা উন্নত চাষিদের হয়তো অনলাইনে সমস্যা নেই। এত স্বল্প সময়ে প্রান্তিক চাষিরা
কী ভাবে ডিজিটাল পদ্ধতি রপ্ত করবেন?
আধিকারিকরা বলছেন, ‘‘মোবাইল ব্যবহারের মতো এটাও শিখে নেবেন চাষিরা।’’