মাঠে শৌচও দায়ী, মানছে পাইকর

গ্রামে ঘুরে দেখা যায় শিবসাগর পাড়, জয়সাগরের মতো বড় পুকুরের ধারে মানুষের বিষ্ঠা ছড়িয়ে। জলট্যাঙ্কি পাড়াতেও বাঁশের ঝোপে বিষ্ঠার দুর্গন্ধ। বিডিও অফিস লাগোয়া মাঠের ছবিটাও এক।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

পাইকর (মুরারই) শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ১২:০৭
Share:

কাগজে-কলমে সেই এলাকা নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে। কিন্তু ডায়েরিয়া উপদ্রুত সেই এলাকায় এখনও মাঠেঘাটে, পুকুরের পাড়ে, ঝোপ-জঙ্গলের আড়ালে খোলা আকাশের নীচে চলছে শৌচকর্ম।
এমনই ছবি মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির পাইকর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পাইকর গ্রামে। হালদারপাড়া, রাজবংশীপাড়ায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ ছড়ালেও এলাকা ঘুরে দেখা গিয়েছে, অনেক বাড়িতে এখনও নির্মল বাংলা প্রকল্পের শৌচাগার তৈরি করা হয়নি। অনেক বাড়িতে তা থাকলেও, সে সব বাড়ির লোকেরা এখনও মাঠেঘাটে, ঝোপ-জঙ্গলে, খোলা আকাশের নীচে শৌচকর্ম করছেন। এলাকায় ডায়েরিয়া ছড়ানোর পিছনে এটাও অন্যতম কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ।
গ্রামে ঘুরে দেখা যায় শিবসাগর পাড়, জয়সাগরের মতো বড় পুকুরের ধারে মানুষের বিষ্ঠা ছড়িয়ে। জলট্যাঙ্কি পাড়াতেও বাঁশের ঝোপে বিষ্ঠার দুর্গন্ধ। বিডিও অফিস লাগোয়া মাঠের ছবিটাও এক। গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ, নির্মল বাংলা প্রকল্প গ্রামে প্রকৃত অর্থে কার্যকর করতে প্রশাসন সদর্থক ভূমিকা নেয়নি। বদলানো যায়নি মানুষের অভ্যাস। ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের তরফে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারের অভাবেরও অভিযোগ উঠেছে। হালদারপাড়ার বাসিন্দা লাল্টু ভাস্কর (মৃত তৃষা মণ্ডলের কাকা) বলেন, ‘‘পাড়ার শ’তিনেক বাড়ির মধ্যে এখনও প্রায় ১০০ ঘরে শৌচালয় নেই। সে সব বাড়ির লোকেদের বাধ্য হয়েই পুকুরের ধারে শৌচকর্ম করতে হয়।’’ তিনি জানান,
এলাকায় যাঁদের বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে, সেখানে ৩-৪ ফুটের গর্ত করা রয়েছে। একটি পরিবারের সবাই প্রতি দিন ব্যবহার করলে খুব দ্রুত ওই সব গর্ত ভরে যাবে। সে জন্য অনেকেই নির্মল বাংলা প্রকল্পের শৌচাগার ব্যবহার না করে খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করতে যাচ্ছেন। নির্মল বাংলা প্রকল্পে ওই এলাকায় শৌচালয় নির্মাণ নিয়ে ক্ষুব্ধ পাইকর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান আব্দুল গণি। তাঁর দাবি, পাইকর গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্মল বাংলা প্রকল্পে এখনও ২০ শতাংশ শৌচালয়ও তৈরি করা হয়নি। উপভোক্তার কাছ থেকে শৌচাগার তৈরির জন্য রসিদ কাটা হলেও কাজ হয়নি। এ জন্য প্রশাসনিক উদাসীনতাকেই তিনি দায়ী করেন। তিনি জানিয়েছেন, শৌচাগার নির্মাণের কাজের মান নিয়েও বিডিও-র কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আব্দুল হকও ডায়েরিয়া পাইকর
গ্রামে খোলা আকাশের নীচে শৌচকর্ম করার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘নির্মল বাংলা প্রকল্পে ওই আরও শৌচাগার তৈরির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন