গ্রামেই হাজির থানা

ভোটার কার্ড, আধার কার্ড হারিয়ে গেলে নতুন কার্ডের আবেদন করার জন্য থানায় ডায়েরি করতে হয়। কিন্তু গ্রামের মানুষের থানা যেতে সঙ্কোচ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩২
Share:

পুলিশের সহায়তা কেন্দ্রে এলাকার মানুষজন। নিজস্ব চিত্র

ভোটার কার্ড, আধার কার্ড হারিয়ে গেলে নতুন কার্ডের আবেদন করার জন্য থানায় ডায়েরি করতে হয়। কিন্তু গ্রামের মানুষের থানা যেতে সঙ্কোচ। খাকি উর্দি দেখলেই অনেকের বুক দুরদুর করে, কেউ বা রাস্তা থেকে সরে যান। তাঁদের পক্ষে থানায় যাওয়ার নাম শুনলে যেন গায়ে জ্বর আসে। ফলে, অনেক সমস্যাই থানা পর্যন্ত পৌঁছয় না। সমাধানও হয় না।

Advertisement

ফলে ভোটার কার্ড হারিয়ে যাওয়ায় অনেকেই আর নতুন কার্ডের জন্য আবেদন জানাতে পারেননি। অন্য জরুরি নথি হারিয়েও একই সমস্যায় রয়েছেন প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন। সেই সব মানুষদের কথা ভেবে এগিয়ে এল পাত্রসায়র থানার পুলিশ। সপ্তাহে এক দিন করে পাত্রসায়রেরর গ্রামে গ্রামে যাচ্ছে থানা। বাঁকুড়ার জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘জনসংযোগ বাড়াতেই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এতে মানুষের কাছে ভাল সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে।’’

কী হচ্ছে সেখানে? থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, গ্রামের কোনও গাছতলা বা আটচালায় বসে পুলিশ কর্মীরা সমাধান করছেন। হাতেনাতে বাসিন্দাদের দেওয়া হচ্ছে হারিয়ে যাওয়া জিনিসের অভিযোগের ডায়েরি নম্বর। অনেককে আবার দরখাস্ত লিখতে সাহায্য করছেন পুলিশ কর্মীরাই। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে, আরও অনেক সমস্যার কথা জানতে পারছেন পুলিশ কর্মীরা। এমনকি এলাকার কাঁচা রাস্তা বা নিকাশি সমস্যার কথাও বাসিন্দারা পুলিশ কর্মীদের অনায়াসে জানাচ্ছেন। বাঁকুড়া জেলা পুলিশ এই কর্মসূচির নাম দিয়েছে ‘পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্স বুথ’। মূলত জনসংযোগ বাড়াতেই এই কর্মসূচি।

Advertisement

সম্প্রতি পুলিশের এমন কর্মসূচি বসেছিল পাত্রসায়রের বিউর-বিতুর পঞ্চায়েতের আলিপুর গ্রামের বটতলায় ।স্থানীয় বাসিন্দারাই পুলিশ কর্মীদের জন্য বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন টেবিল-চেয়ার। আলিপুরের সাবিনা তরফদার বলেন, ‘‘আমার আধার কার্ড হারিয়ে গিয়েছিল অনেক দিন। থানা যেতে কেমন ভয় ভয় করে। তা ছাড়া, সংসারের মেলা কাজ পড়ে থাকে। সে সব সামলে সময় হচ্ছিল না। পুলিশবাবুরা গ্রামে আসায় সেই কাজটা এখানেই সেরে ফেললাম। বড় উপকার হল।’’

ওই গ্রামেরই হারাধন সরকার বলেন, ‘‘আমার ভোটার কার্ড হারিয়ে গিয়েছিল বেশ কিছু দিন আগে। চাষ ছেড়ে কী অতদূরে থানায় যাওয়া যায়? পুলিশ আসায় এখানেই অভিযোগ জানিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ডায়েরি নম্বর পেয়ে গেলাম।’’ পাত্রসায়র থানার এক আধিকারিক জানান, প্রতি সপ্তাহেই তাঁরা কোনও না কোনও গ্রামে যাচ্ছেন। অনেক সমস্যার কথাই গ্রামবাসী জানাচ্ছেন। সে সব তাঁরা যত্ন করে সংগ্রহ করে এনে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়ে দিচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন