Death

খবর কেন ছিল না, প্রশ্ন গ্রামের

গ্রামে হাতি ঢোকার সম্ভাবনা নিয়ে বাসিন্দাদের কেন আগাম সতর্ক করা হয়নি? এই প্রশ্নই তুলছেন রানিবাঁধের বুধখিলার বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানিবাঁধ শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ০০:১৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে হাতি ঢোকার সম্ভাবনা নিয়ে বাসিন্দাদের কেন আগাম সতর্ক করা হয়নি? এই প্রশ্নই তুলছেন রানিবাঁধের বুধখিলার বাসিন্দারা। বন দফতরের বিরুদ্ধে ছড়িয়েছে ক্ষোভ। দফতরের আবার দাবি, হাতিগুলি হঠাৎ অন্য পথ ধরায় বিপত্তি। এমন পরিস্থিতি রুখতে বাসিন্দাদের আগাম সতর্ক করার রাস্তাতেই জোর দিচ্ছেন বন কর্তারা।

Advertisement

দিন সাতেক আগে ৪২টি হাতি ঝাড়গ্রাম থেকে দক্ষিণ বাঁকুড়ায় ঢুকে পিড়রগাড়ি, সারেঙ্গা, সিমলাপাল, মটগোদা রেঞ্জে ঘোরাফেরা করেছিল। বন দফতর সূত্রের, সোমবার পিড়রগাড়ি থেকে হাতিগুলিকে খেদানো শুরু করে হুলাপার্টি। বুধবার সকালে ২৪টি হাতি বুধখিলায় ঢুকে পড়ে। ওই হাতিগুলির হামলাতেই মৃত্যু হয় গ্রামের ধরণী সর্দার (৬২) ও বাসন্তী সিং সর্দারের (৩৪)।

যে পথে হাতি যেতে পারে, সেখানকার বাসিন্দাদের আগে থেকে খবর পাঠিয়ে সতর্ক করে বন দফতর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বুধখিলায় হাতি আসার ব্যাপারে আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি। ঘটনার পরে খাতড়া-রানিবাঁধ রাস্তার ভুড়কুড়া মোড়ে পথ অবরোধ চলে প্রায় আধ ঘণ্টা। বন দফতরের রানিবাঁধ রেঞ্জ আধিকারিক ভাবনা লামা ও রানিবাঁধ থানার আইসি উত্তম দেবনাথ গিয়ে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

Advertisement

বুধখিলার বাসিন্দা রবীন্দ্র সর্দার, অজুত সর্দারদের ক্ষোভ, “আমাদের গ্রামে হাতি আগে ঢোকেনি। এমনটা হতে পারে তা আগাম আঁচ করতে পারলে সতর্ক হওয়ার সুযোগ পেতাম। কিন্তু গ্রামের পথ দিয়ে হাতি খেদিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে তা জানা ছিল না।”

বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, হাতি খেদানোর আগে সুষ্ঠু পরিকল্পনা করা হয় স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে। যে সব গ্রামের উপর দিয়ে হাতিদের নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে, সেখানকার বাসিন্দাদের মাইকে প্রচার করে সতর্ক করা হয়। মোবাইলে পাঠানো হয় ‘মেসেজ’। জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়েও বৈঠক করে খবর দেওয়া হয় গ্রামে।

এ ক্ষেত্রে সে নিয়ম মানা হয়েছিল কি না, তা নিয়েই ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। পুলিশের দাবি, হাতি খেদানো হবে সে কথা বন দফতর জানায়নি। এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মা বলেন, “হাতি খেদানোর আগাম খবর আমাদের জানা ছিল না।” স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য চিত্তরঞ্জন মাহাতো বলেন, “হাতি তাড়ানো হবে, এমন খবর জানতামই না। গ্রামে জোড়া মৃত্যুর ঘটনার পরেই সব জানতে পারছি। আগাম জানলে গ্রামবাসীকে সতর্ক করা যেত।”

বিষয়টি নিয়ে স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়েছে বাঁকুড়া দক্ষিণ বন বিভাগ। রানিবাঁধের রেঞ্জ আধিকারিক ভাবনা লামা বলেন, “হাতিগুলিকে সারেঙ্গা রেঞ্জের দিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আচমকা তারা পথ বদল করায় এই ঘটনা ঘটেছে।” ডিএফও (দক্ষিণ) দেবাশিস মহিমাপ্রসাদ প্রধানের দাবি, “বন দফতর পরিকল্পনামাফিক কাজ করছিল। হাতির দল পথ বদলাতেই সমস্যা দানা বাঁধে।” তাঁর আশ্বাস, ‘‘এলাকার বাসিন্দাদের আগাম খবর দিয়েই হাতিগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন