খামখেয়ালি আবহাওয়া, কার্তিকেও আইসক্রিম

শ্রীনিকেতন আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস

Advertisement

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

বোলপুর শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৫১
Share:

স্বস্তি: গরম কাটাতে আইসক্রিম। শনিবার বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র

দিনের বেলায় রোদের তাপে পিঠ পুড়ছে। সন্ধ্যে নামতেই শীতের আমেজ। রাত যত বাড়ছে, ঠাণ্ডাও বাড়ছে। ভোরের দিকে তো গায়ে হালকা চাদর নেওয়া ছাড়া গতি নেই। শরৎকাল শেষ হয়ে হেমন্তকাল পড়তেই এক অদ্ভুত আবহাওয়া। দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে বিস্তর ফারাক। আগে যে সময়টাতে গায়ে চাদর দিয়ে ঘুরতে হতো, এখন সেই সময়ে সকলে আইসক্রিম খাচ্ছেন।

Advertisement

শ্রীনিকেতন আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৬ অক্টোবর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য থাকার ফলেই দিনের বেলা গরম আর রাত হলে ঠাণ্ডা বাড়ছে। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় লাভ হচ্ছে আইসক্রিম বিক্রেতাদের। আগে দুর্গাপুজো পেরোলে আইসক্রিমের বিক্রি অনেকটা কমে যেত। এখন তা হচ্ছে না। কিছু বিক্রেতা জানালেন একটু বেশিই বিক্রি হচ্ছে কুলপি, আইসক্রিম, লেবু জল। বিক্রেতা রাজা শেখ জানান, তিনি মিস্ত্রিপাড়া, হাটতলা, পশ্চিমপাড়া, খাদিপাড়া-সহ আরও কয়েকটি পাড়ায় কুলপি ও লেবু জল বিক্রি করেন। দুটো মিলিয়ে এখন প্রতিদিন প্রায় ৩০০ পিস করে বিক্রি হচ্ছে। আইসক্রিম ব্যবসায়ী প্রদীপ পোদ্দারের নিজস্ব দোকান রয়েছে। তিনি বললেন, ‘‘অর্ডারের জন্য আইসক্রিম বিক্রি তো হচ্ছেই। এছাড়া খুচরো বিক্রি যেমন হয় তেমনই হচ্ছে।’’ একইভাবে আইসক্রিম তৈরির কাজ চলছে ফ্যাক্টরিগুলোতেও।

এ বারে বর্ষাকাল বুঝতেই পারেনি বোলপুর। শীতের আমেজ থাকলেও শীত না পড়ায় এখন থেকেই চিন্তায় শহরবাসী। অবসরপ্রাপ্ত ভূগোল শিক্ষক শিশিরকুমার দাসের কথায়, ‘‘আমি যখন ছাত্র ছিলাম কালীপুজো দেখেছি গায়ে সোয়েটার, মাথায় টুপি পরে। যে বছর রাতে পুজোর সময় পড়ত আলাদা করে আরও একটা কম্বল জড়াতে হত। প্রাকৃতিক ভারসাম্য এতটাই নষ্ট হয়েছে এখন তো শুধু গরমটাই বোঝা যায়। অন্য ঋতুগুলো তো বোঝাই যায় না।’’

Advertisement

তবে শীত পড়ল না বলে এখনই হতাশ হওয়ার কিছু নেই বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতরের তথ্য। ২০১৭ সালের শেষের দিকটায় শীত না পড়লেও ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে খুব ঠাণ্ডা পড়ে। ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৮ জানুয়ারি সামান্য বেড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয় ৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৯ জানুয়ারি কিছুটা কমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয় ৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখনই শীতের জন্য আক্ষেপের কিছু নেই বলে অভিমত আবহাওয়া দফতরের। তবে এই সময় হঠাৎ গরম লাগল মানেই ঠান্ডা জাতীয় কিছু খেতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকেরা। ঠান্ডা সে রকম না লাগলেও রাতের দিকে বাইরে বেরোলে চাদর জড়ানো অন্ততপক্ষে মাথা ঢাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। না হলে জ্বর, মাথাব্যথা, কাশি হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন