তালান্দারা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
চার দিন নয়। পুজোর আনন্দ এখানে তিন দিনেই শেষ। অষ্টমীতে শুরু হয়ে দশমীতে পুজো শেষ হয় মানবাজার ১ ব্লকের তালান্দারা গ্রামে।
কেন এমন? গ্রামের মন্দির চত্বরে বসে গ্রামের প্রবীণেরা শোনালেন প্রায় দু’শো বছর আগে পুজো শুরুর সেই কাহিনিই। এই মৌজা তখন গড় পাথরমহড়া রাজবাড়ির অধীনে। রাজবাড়ির পুজোয় এক কলসী ঘি আর পাঁঠা যেত ফি বছর। কিন্তু সে বছরে কংসাবতী কানায় কানায় ভর্তি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ ও পারে যেতে রাজি নয়। অথচ পুজোর সামগ্রী অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে না। শেষে গ্রামের সামন্ত খোসাল সর্দার নদীর পাড়ে পুজোর আয়োজন শুরু করেন। রাজা খবর পেয়ে খোসালকে ধরে নিয়ে যায়। জনশ্রুতি, ওই রাতেই রাজা দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে খোসালকে মুক্তি দেন। সপ্তমীতে খোসাল গ্রামে ফিরে এসে পুজোর আয়োজন শুরু করেন। অষ্টমী থেকে শুরু হয় পুজো। এখনও এই গ্রামের পুজোয় পাথরমহড়া রাজবাড়ির তোপধ্বনিতে বলি দেওয়ার প্রথা রয়েছে।
তালান্দারা গ্রামে মূলত বাউরি সম্প্রদায়ের বাস। গ্রামের বাসিন্দা শান্তিপদ বাউরি, কৃত্তিবাস বাউরিরা জানান, পুজোয় আয়োজন তারা নিজেরাই করেন। কোনও চাঁদা তোলা হয় না। রাজা পুজোর অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু জমিও দান করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তা বেহাত হয়ে যায় বলে জানান তাঁরা।
তবে, গ্রামের খুদে বুচি বাউরি, চঞ্চল বাউরিরা এত সব শুনতে চায় না। তাদের আফশোস, আর একটা দিন পেলে আরও মজা হত। তবে গ্রামে পুজো হচ্ছে, এতেই তারা খুশি।