নিকাশি: নালা নির্মাণের কাজ চলছে। ছবি: নিজস্ব চিত্র
প্রায় পনের বছর আগে রামপুরহাট পুরসভা লাগোয়া এলাকায় বসতি গড়েছিলেন তাঁরা। ভেবেছিলেন নাগরিক সুবিধা মিলবে। কিন্তু এখনও রাস্তা সংস্কার, বিদ্যুদায়ন, নিকাশি নালা নির্মাণ, পানীয় জল— সমস্ত ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হয় বলে তাঁদের দাবি। সম্প্রতি রামপুরহাট পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া সংহতিপল্লির বাসিন্দারা নিজেরাই চাঁদা তুলে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে নিকাশি নালা নির্মাণ শুরু করেছেন।
রামপুরহাট হাসপাতাল যাওয়ার আগে জাতীয় সড়কের ধারে সংহতিপল্লি। এলাকাটি রামপুরহাট ১ ব্লকের দখলবাটি পঞ্চায়েতের অধীন। ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না।
এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল কবীর, মহম্মদ হাসান, জাভেদ আকতার, মহম্মদ ইমানুল হক, মহম্মদ হাসানুজ্জামানদের অভিযোগ, পুরসভা লাগোয়া এলাকা হলেও এখনও তাঁদেরকে মোরাম রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। সেই মোরাম রাস্তাটি রামপুরহাট স্টেশন এবং রামপুরহাট হাসপাতাল যাওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ বা রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতি বা দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েত— কেউই পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য উদ্যোগী হয়নি।
মহম্মদ ইমানুল হক জানান, নিকাশি নালা না থাকায় খুবই সমস্যা হত। প্রতি বছর বর্ষায় তাঁরা বাইরে বেরোতে পারতেন না। বাধ্য হয়ে প্রথমে নিজেরাই প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে সাড়ে চারশো ফুট নিকাশি নালা নির্মাণ করেন। অনেক তদ্বিরের পরে ছ’মাস আগে পঞ্চায়েত থেকে সাড়ে চারশো ফুটের আরও একটি নিকাশি নালা নির্মাণ করা হয়। কিন্তু তাও পর্যাপ্ত ছিল না। অবশেষে সম্প্রতি সাড়ে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে এলাকার বাসিন্দারাই ১৮টি হিউম পাইপ বসিয়ে আরও একটি নিকাশি নালা নির্মাণ করছেন।
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরাই চাঁদা তুলে ১৫টি বিদ্যুতের খুঁটি কিনে এলাকায় বিদ্যুদায়নের ব্যবস্থা করেছেন। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন আগে পঞ্চায়েত থেকে এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পে রাস্তা সংস্কারের দু’টি কাজের জন্য ১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা বরাদ্দের বোর্ড টাঙানো হলেও সেই কাজ আজও হয়নি। প্রতিবাদে তাঁরা পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিকে গণ স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিও দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, মোরাম রাস্তাটি দ্রুত পাকা করা হোক। এলাকায় চালু হোক জল সরবরাহ ব্যবস্থা। পাশাপাশি এলাকাটিকে পুরসভার অর্ন্তভুক্ত করারও দাবি উঠেছে।
তবে রামপুরহাট পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের লক্ষ্মণ মণ্ডল জানান, এখনই ওই এলাকাটি পুরসভার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়। অবশ্য সেখানে যে রাস্তাঘাট সংস্কার এবং পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে তা মেনে নিয়েছেন তিনিও ।
দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের সাফিক হোসেন জানান, ওই রাস্তাটি পাকা করার জন্য স্কিম করা আছে। টাকা পেলেই কাজ হবে। পানীয় জলের জন্য এলাকায় সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে বলে তাঁর দাবি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘উন্নয়নের জন্য যেমন যেমন টাকা পাওয়া যাবে সেই ভাবেই আমরা কাজ করতে পারব।’’