deucha

Deucha: বাধা মহাসভার, ‘গো ব্যাক’ শুনে ফিরলেন অধীর

ডেউচার প্রস্তাবিত খনি-এলাকায় ঢুকতে গিয়ে বুধবার আদিবাসীদের বাধার মুখে পড়লেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

Advertisement

পাপাই বাগদি

ডেউচা (বীরভূম) শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২ ০৬:১৫
Share:

ডেউচার পথে বাধা পেয়ে ফিরতে হচ্ছে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীকে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

ডেউচার প্রস্তাবিত খনি-এলাকায় ঢুকতে গিয়ে বুধবার আদিবাসীদের বাধার মুখে পড়লেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ‘গো ব্যাক স্লোগান দিয়ে অধীর ও সঙ্গের কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের ডেউচা-পাঁচামি এলাকায় ঢুকতে দিলেন না কয়লা খনির বিরোধিতায় গড়ে ওঠা ‘আদিবাসী জমি জীবন-জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভা’র সদস্যেরা।

Advertisement

এ দিন ডেউচা-পাঁচামি কয়লা শিল্পাঞ্চল এলাকা ঘুরে দেখার কথা ছিল অধীরের। সেই মতোই এ দিন দুপুর একটা নাগাদ মল্লারপুর হয়ে সোঁতসাল মোড় থেকে কাপাসডাঙ্গা হয়ে চাঁদা মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, জেলা কংগ্রেস সভাপতি মিল্টন রশিদ-সহ দলের নেতা-কর্মীরা। চাঁদা মোড়ে অধীরের গাড়ির সামনে মোটরসাইকেলে ‌থাকা কংগ্রেস কর্মীদের আটকে দেন খনি-বিরোধী আন্দোলনকারীরা। গাড়ি থেকে নেমে পড়েন অধীর। তিনি অভিযোগ করেন, জোর করে আদিবাসীদের জমি কেড়ে কয়লা খনি প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে।

মহাসভার সদস্যেরা পাল্টা বলেন, এই এলাকায় কোন রাজনৈতিক দলকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তুলে সেখান থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয় কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলকে। আদিবাসীদের ক্ষোভ, যখন এখানে তাঁদের উপরে অত্যাচার করা হয়েছিল, সেদিন এই রাজনৈতিক দলের নেতারা কোথায় ছিলেন? তখন তাঁদের কাউকে পাশে পাওয়া যায়নি। তাই এখনও কাউকে ডুকতে দেওয়া হবে না বলে মহাসভার দাবি। যদি কোনও সংগঠন এখানে আসে, তাহলে তাদের কথা মহাসভা ভাববে। কিন্তু, নিজেদের আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক দলের সাহায্য মহাসভা নেবে না।

Advertisement

মহাসভার পক্ষ থেকে গণেশ কিস্কু ও শিবলাল সরেন বলেন, ‘‘আমরা হঠাৎ খবর পাই এখানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আসছেন। খবর পাওয়া মাত্রই আমরা চাঁদা মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছিলাম। এই এলাকায় কোনও রাজনৈতিক দলের প্রভাব পড়তে আমরা দেব না। আমরা নিজেরাই নিজেদের জমি রক্ষা করব।’’ মহাসভার সঙ্গে জুড়ে থাকা প্রসেনজিৎ বসুও এই অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘‘রাজনৈতিক নেতাদের এলাকায় ঢোকার চেষ্টা ব্যর্থ করে মহসভা জানিয়ে দিয়েছে, এটা কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ নয়। সঙ্কীর্ণ দলীয় স্বার্থের উর্ধ্বে উঠেই সেটাকে সমর্থন জানানো উচিত।’’

পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নিজেও বলেন, ‘‘আমরাও তাঁদের এই মনোভাবকে শ্রদ্ধা করি ও সম্মান করি। আদিবাসীদের এই আন্দোলনকে কংগ্রেস রাজনীতিকরণ করতে চায় না।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, তাঁদের পথ কেউ আটকায়নি। তাঁরা ওখানে যাননি, ফলে আটকানোর প্রশ্নও উঠছে না। অধীর বলেন, ‘‘আমরা এলাকার মানুষের এই আন্দোলনকে পূর্ণ মর্যাদা দিই। আমাদের সঙ্গে ওঁদের কোনও বিরোধ নেই। আমরাও বিরোধিতা করতে এখানে আসিনি। ডেউচা পাঁচামির বাস্তব চিত্রটা দেখার জন্য এসেছিলাম। আমরা ওঁদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের কথা শুনতে আমরা এখানে এসেছি।’’

অধীরের বক্তব্য, এখানে যে পাথর খাদান ও ক্রাশার শিল্প চলছে, তা বহু পুরনো। এবং এখানে আদিবাসীদের শোষণও যুগ যুগ ধরে চলছে। আদিবাসীদের অবস্থায় কোনও পরিবর্তন হয়নি। অধীরের কথায়, ‘‘তাঁদের উপরে যেন এই সরকার বুলডোজার চালানোর চেষ্টা না-করে! রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, এই এলাকার আদিবাসীদের বিশ্বাস অর্জন না-করে শিল্প করার চেষ্টা করা হলে ভুল হবে এবং অন্যায় হবে আদিবাসীদের উপরে। ৭০০ স্কোয়ার ফিটের ঘর দিয়ে ওঁদের ভোলানো যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন