আমরণ: মধ্যমণি জাকির। মঞ্চ রয়েছেন কংগ্রেস বিধায়কও। নিজস্ব চিত্র
দ্বারকা নদীর উপরে সেতু-সহ একাধিক দাবিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ব্লক অফিসের সামনে মঞ্চ বেঁধে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি জাকির হোসেন। বাম আমলে বীরভূম জেলা পরিষদের বিরোধী দলের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ দিনের এই কংগ্রেস নেতা পরে তৃণমূলে চলে গেলেও এখন শাসকদলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন জাকির। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও দলের হয়ে নয়। এলাকার উন্নয়নের দাবিতে অনশনে বসেছি।’’ তবে, মঞ্চ বেঁধে অনশন শুরুর প্রথম দিনেই দেখা গিয়েছিল এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক মিলটন রশিদকে।
ঘটনা হল, বছর পাঁচেক আগেও একই ভাবে উন্নয়নের দাবিতে ব্লক অফিসের সামনে মঞ্চ তৈরি করে টানা ১৩ দিন অনশন করেছিলেন জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘এর আগে অনশনের ফলে অনেক দাবি পূরণ হয়েছে। কিন্তু এখনও অনেক দাবি পূরণ হতে বাকি আছে। দীর্ঘ দিন ধরে সেই দাবিগুলির বিষয়ে প্রশাসনের কাছে জানালেও এখনও সেগুলি পূরণ হয়নি।’’ রামপুরহাট ২ ব্লকের অধীন ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মূল কেন্দ্র মাড়গ্রাম। রামপুরহাট ২ ব্লকের প্রশাসনিক ভবনও মাড়গ্রামে অবস্থিত। অথচ, মাড়গ্রামের সঙ্গে পঞ্চায়েতগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও উন্নত হয়নি। সহজে ব্লক অফিসে আসার জন্য এলাকার দ্বারকা নদীর উপর সেতু নির্মাণ হয়নি। পানীয় জলের সমস্যাও মেটেনি।
অনশন মঞ্চ থেকে সেই সব দাবিই তুলে ধরেছেন জাকির। তিনি জানাচ্ছেন, দ্বারকা নদীর উপর সেতু নির্মাণ, মাড়গ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতি সাধন, মাড়গ্রামে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের উদ্যোগে রিজার্ভার তৈরি-সহ এলাকার সামগ্রিক উন্নতির দাবিতেই অনশন। একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদে রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, পঞ্চায়েত সদস্য এমনকি এলাকার কংগ্রেস বিধায়ককেও পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে রাখা হয়নি। কেবলমাত্র সাহাপুর পঞ্চায়েতের তারাপীঠের উন্নতির জন্য সাহাপুর পঞ্চায়েতকে রাখা হয়েছে।’’
অনশনের খবর পৌঁছেছে প্রশাসনেও। রামপুরহাট ২ ব্লকের বিডিও প্রসন্ন মুখোপাধায় বলেন, ‘‘অনশন তুলে নেওয়ার জন্য ওনাকে বোঝানো হয়েছে। কিন্তু উনি এখনও পর্যন্ত অনড়।’’ জাকিরের তোলা দাবি প্রসঙ্গে বিডিওর জবাব, দ্বারকার উপরে সেতু তৈরির ক্ষেত্রে প্রশাসন আগেই উদ্যোগী হয়েছে। অন্য কাজগুলোর বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।
অনশনকে গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের দৌলৎউল্লেসা নুরি বলেন, ‘‘সেতুর দাবি তো আমাদেরও রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছায় আস্তে আস্তে সব দাবিই পূরণ হবে।’’