সপ্তাহ পার, ভোগান্তি মিটবে কবে

একটা গোটা সপ্তাহ ঘুরতে চলল। পানীয় জলের সমস্যা আজও মিটল না ঝালদায়। মাঝে বিক্ষিপ্ত ভাবে দু-এক দিন জল মিলেছে ঠিকই। তা প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই নয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত সোমবার থেকে টানা তিন দিন নির্জনা থাকার পরে বুধবার বিকেলে সামান্য সময়ের জন্য পানীয় জল মিলেছিল বটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২১
Share:

মুরগুমা পাম্পহাউসে ঝালদার পুরপ্রধান ও আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র

একটা গোটা সপ্তাহ ঘুরতে চলল। পানীয় জলের সমস্যা আজও মিটল না ঝালদায়।

Advertisement

মাঝে বিক্ষিপ্ত ভাবে দু-এক দিন জল মিলেছে ঠিকই। তা প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই নয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত সোমবার থেকে টানা তিন দিন নির্জনা থাকার পরে বুধবার বিকেলে সামান্য সময়ের জন্য পানীয় জল মিলেছিল বটে। কিন্তু সেই জলও ছিল খাওয়ার অযোগ্য। তার পর থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েকটি ওয়ার্ডে অনিয়মিত ভাবে কিছুক্ষণের জন্য পানীয় জল মিললেও এলাকাবাসীর ক্ষোভ, পাড়ার কলে জল মিলছে না। এই অবস্থায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। রবিবারও ছবিটা আলাদা ছিল না। সকালে কলে জল না মেলায় বিভিন্ন ওয়ার্ডেই ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করেছে।

ঝালদার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শম্পা সিংহ বলেন, ‘‘দিনের পর দিন জল আসছে না। কী সমস্যায় পড়েছি, তা আমরাই জানি। কত দিন আর দূর থেকে থেকে জল বয়ে নিয়ে আসব?’’ বাধ্য হয়ে জল কিনতে হচ্ছে জানিয়ে তাঁর অভিযোগ, শহরের মানুষের এই চরম অসুবিধা নিয়ে পুরসভার কোনও হেলদোল রয়েছে বলে তাঁদের মনে হচ্ছে না। ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সিদ্ধেশ্বর বিটের কথায়, ‘‘এই সপ্তাহে বিক্ষিপ্ত ভাবে দু-এক দিন জল মিললেও টানা জল আসেনি। পুর-এলাকার লোকজন কোথা থেকে পানীয় জল পাবে?’’

Advertisement

এ হেন পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের প্রশ্ন, কেন উপেক্ষা করা হচ্ছে পানীয় জলের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুর-পরষেবার বিষয়টিকে। প্রাক্তন পুরপ্রধান মধুসূদন কয়াল বলেন, ‘‘এই যে পুরসভা টানা পানীয় জল দিতে ব্যর্থ, তার পরেও সব কাউন্সিলরকে নিয়ে কোনও বৈঠক ডাকা হয়নি। এই সমস্যাটা তো শুধু শাসক দলের নয়, ঝালদার মানুষের। কেবলই দাবি করা হচ্ছে দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করা হবে। কিন্তু, আদৌ তা হচ্ছে না। কেন সমস্যা হয়েছে, কত দিনে এর সমাধান হবে, তা মানুষের কাছে জানিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।’’ পানীয় জল নিয়ে দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়েছে ঝালদা শহর তৃণমূলও। পানীয় জল নিয়ে মানুষের অসন্তোষ ও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের, জানিয়ে শহর তৃণমূলের নেতা সোমনাথ কর্মকার বলেন, ‘‘কংগ্রেসকে সরিয়ে আমরা যখন ক্ষমতায় এলাম, মানুষের প্রত্যাশাও ছিল, আগের তুলনায় আমরা ভাল পরিষেবা দেব। কেননা আমরা শাসকদলে রয়েছি। কিন্তু এ ভাবে টানা জল না মিললে মানুষ তো প্রশ্ন করবেনই। আমরা পুরপ্রধানকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলেছি।’’

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, পাম্পিং স্টেশনে যান্ত্রিক গোলযোগের সঙ্গে বিদ্যুতের সমস্যার কারণে পানীয় জল সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। পাম্পিং স্টেশনে ঠিক কী সমস্যা হয়েছে, তা সরেজমিন দেখতে এ দিন মুরগুমা জলাধারে যান ঝালদার পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবাল, উপপুরপ্রধান কাঞ্চন পাঠক। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘সরবরাহ লাইনের সমস্যা মেরামত করা গিয়েছে। এ বার অন্য সমস্যা হয়েছে। সকালে জল সরবরাহ করার জন্য আগের দিন বিকেলে বা সন্ধ্যের সময় জল তোলা হয়। কিন্তু ওই সময় ভোল্টেজ খুব কম থাকায় পাম্পাই চালানো যাচ্ছে না। তাই সরবরাহ করা যাচ্ছে না।’’ মুরগুমা পাম্পিং স্টেশনের দায়িত্বে থাকা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের কর্মী পীযূষকান্তি মাহাতোও সে কথা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন