নিয়মকে বুড়ো আঙুল

দশটার পরে ফাটল বাজি

পুরুলিয়া জেলায় সাধারণত কালীপুজোর রাতের তুলনায় দেওয়ালির রাতেই বেশি বাজি ফাটে। অবাঙালি পরিবারের মধ্যেই এই উৎসব পালনের রীতি রয়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, রাতে লক্ষ্মী-গণেশের পুজো শেষ হওয়ার পরে বাজি ফাটানো তাঁদের উৎসবেরই অঙ্গ। তবে শুধু তাঁরাই নয়, বাঙালিরাও বাজি হাতে বেরিয়ে পড়েন। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৫৩
Share:

দুমদাম: পুরুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

কালীপুজোর রাত শব্দদৈত্যের হাত থেকে রেহাই মিললেও দেওয়ালির রাতে এড়ানো গেল না। পুরুলিয়া থেকে রঘুনাথপুর, আদ্রা রেলশহর-সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করেই বাজি ফাটানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে আদালত বাজি ফাটানোর যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল, সেই ১০টার পরেও কান ফাটানো শব্দ শোনা গিয়েছে। তবে রাতের দিকে ধীরে ধীরে বাজির দাপট কমেছে। বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরে বাজি ফাটলেও কালীপুজোর মতো দাপট ছিল না। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলেছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

Advertisement

পুরুলিয়া জেলায় সাধারণত কালীপুজোর রাতের তুলনায় দেওয়ালির রাতেই বেশি বাজি ফাটে। অবাঙালি পরিবারের মধ্যেই এই উৎসব পালনের রীতি রয়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, রাতে লক্ষ্মী-গণেশের পুজো শেষ হওয়ার পরে বাজি ফাটানো তাঁদের উৎসবেরই অঙ্গ। তবে শুধু তাঁরাই নয়, বাঙালিরাও বাজি হাতে বেরিয়ে পড়েন।

সুপ্রিমকোর্ট রাত আটটা থেকে দু’ঘণ্টা কম দূষণের বাজি পোড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু, পুরুলিয়াবাসীর অভিজ্ঞতা, অনেকেই সে নিয়মের ধারেকাছে যাননি। বুধবার রাত আটটার আগে থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শব্দবাজি ফাটানোর শব্দ কানে এসেছে। রাত যত বেড়েছে, বাজিও পাল্লা দিয়ে ফেটেছে। তবে, অন্যবারের তুলনায় তা কিছুটা কম বলেই অনেকের মত।

Advertisement

পুরুলিয়া শহরের এক পরিবারের স্বীকারোক্তি, ‘‘এ বারও পুজোর পরে আমরা বাজি ফাটিয়েছি। আতসবাজির সঙ্গে শব্দবাজিও ফাটিয়েছি। তবে সুপ্রিমকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা মেনেই।’’ শহরের মেন রোডের একটি পরিবারের আবার দাবি, ‘‘শব্দবাজি ফাটানোটা রেওয়াজ হয়ে গিয়েছে। তবে এ বার অনেক কম ফাটিয়েছি।’’ ঝালদার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আগের থেকে কম বাজি ফাটিয়েছি। আতসবাজিতেই বেশি আনন্দ। পড়শিরাও সেটাই পছন্দ করছেন। উৎসব তো পড়শিদের নিয়েও।’’

পুরুলিয়া শহরের স্টেশনপাড়া এলাকার বাসিন্দা শক্তি কর্মকার বলছিলেন, ‘‘দেওয়ালির রাতে এ বারও শব্দবাজি ফেটেছে। তবে আগের তুলনায় কম।’’

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা দেওয়ালির আগেই শহরের ফুটপাতের কয়েকটি বাজির দোকানে হানা দিয়েছিলাম। বেশ কিছু শব্দবাজিও আটক করা হয়েছে। তবে শহরের দোকানগুলি থেকে শব্দবাজি মেলেনি। বিক্রেতারা বাজি কম তুলেছিলেন। তাতে বাজি অনেকটাই কম ফেটেছে।’’

বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শহরেও সন্ধ্যার পরে শব্দবাজির দাপট দেখা গেলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অনেকটাই কমে যায় বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। কালীপুজোর দিন মঙ্গলবার বিষ্ণুপুর থেকে পুলিশের অভিযানের প্রচুর বাজি আটক হওয়ায় এমনিতেই শব্দবাজির বিক্রি অনেকটা কম ছিল এই শহরে। তার পরেও বুধবার দেওয়ালির সন্ধ্যা থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে শব্দবাজি ফাটতে দেখা যায় বিষ্ণুপুরে। বাঁকুড়া শহরেও সন্ধ্যার পরে বিক্ষিপ্ত ভাবে শব্দবাজি ফাটতে শোনা গিয়েছিল। পুলিশের দাবি, টহল থাকায় এ বার বাজি কমই ফেটেছে। শব্দবাজি ফাটানো নিয়ে কোনও অভিযোগ মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন