এই রাস্তা নিয়েই ক্ষোভ এলাকার বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র
মাটির কাঁচা রাস্তা। বছর কয়েক আগে পাথর বিছানো হয়েছিল বটে, তবে পাকাভাবে তৈরি হয়নি। মোরাম বিছানোরও চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেই মোরাম এখন পাশের ঢিবি থেকে রাস্তায় নেমে যাতায়াতের পথকে আরও কর্দমাক্ত করে তুলছে। এই রাস্তার দিকে সরকারি আধিকারিকদের নজর ফেরানোর উদ্দেশ্যেই ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু করল হরেকৃষ্ণপুরের একটি ক্লাব। কাঁচা রাস্তার সুরাহা না হলেও এলাকায় খেলাধুলোর চর্চা বেড়েছে।
হরেকৃষ্ণপুর জল সরবরাহ প্রকল্পের কেন্দ্র। প্রায় চার দশক ধরে এখান থেকে মানবাজার শহরে জল সরবরাহ হয়। কিন্তু নেহাত প্রয়োজন ছাড়া শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে জল সরবরাহ কেন্দ্র হরেকৃষ্ণপুরে কেউ যেতে চান না। এর কারণ পারতপক্ষে গ্রামের বেহাল রাস্তা। অথচ সাঁওদা, কেশাতোড়া লাগোয়া পুঞ্চা থানার ভক্তাবেড়া এলাকার বাসিন্দাদের মানবাজারে যেতে হলে এই কাঁচা পথই ধরতে হয়। পাকা রাস্তা পেতে গ্রামের বাসিন্দারা বিভিন্ন সময় আর্জি জানিয়েছিলেন। অভিযোগ তাতে কাজ হয়নি। তার পরেই এই ক্রিকেট প্রতিযোগিতা আয়োজনের ভাবনা। গ্রামবাসীদের একাংশ ভাবলেন, গ্রামে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা আয়োজন করলে গ্রামবাসীদের মধ্যে খেলাধুলো সম্পর্কে উৎসাহ বাড়বে। তাছাড়া, গ্রামে সরকারি আধিকারিক তথা অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আনাগোনা বাড়লে গ্রামের কাঁচা রাস্তার দিকেও তাঁদের নজর পড়বে। তাতেই যদি কাঁচা সড়কের কোনও সুরাহা হয়।
সেই ভাবনা থেকেই গ্রামে ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আসর বসানো হয়েছিল। আয়োজক সংস্থা হরেকৃষ্ণপুর কালীমাতা ক্লাব সুত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর প্রতিযোগিতার ৩য় বর্ষ। শুক্রবার শেষ পর্বের খেলা হয়েছে। যদিও ক্রিকেট প্রতিযোগিতার তিন বছর কেটে গেলেও বেহাল রাস্তার মেরামতি এখনও হয়নি। তবে ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আসর চলছে।
মানবাজার থেকে পুঞ্চা থানার পায়রাচালি মুখী রাস্তায় সাঁওদা গ্রাম থেকে কাঁচা রাস্তা শুরু হয়েছে। কয়েক বছর আগে রাস্তার কিছুটা অংশ পাথর বিছানো হয়েছিল। কিন্তু রোলার দিয়ে মাড়াই করা হয়নি। ফলে রাস্তার অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। মাড়াই করা হবে বলে গত বছর রাস্তার পাশে মোরাম ফেলা হয়েছিল। বর্ষায় গলে মাটির স্তুপ কিছুটা রাস্তায় নেমে এসেছে। আবার বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে কোথাও কোথাও রাস্তার গর্ত ভরাট করতে ইটের টুকরো বিছিয়েছিলেন। সাইকেল এবং মোটরবাইক আরোহীদের দুর্ঘটনার কবলে পড়া নিত্যকার ঘটনা। জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুল্যান্সের চালক গ্রামে আসতে টালবাহানা করেন বলে স্তানীয়দের অভিযোগ।
মানবাজার ১ বিডিও নীলাদ্রি সরকার অবশ্য আশার কথা শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মানবাজারের সাঁওদা গ্রাম থেকে হরেকৃষ্ণপুর গ্রাম অবধি কাঁচা রাস্তা পাকা হবে। জেলা পরিষদ থেকে রাস্তা নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ।’’