নোটের আকালেও আলোর রোশনাইয়ে ভাসল রামপুরহাট শহরের দক্ষিণা কালিকা মাতার পুজো।
রামপুরহাট শহরে দক্ষিণা কালিকা মাতার পুজোয় সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় রামপুরহাট হাসপাতাল পাড়ায়। সেখানে বাবলা কালীর পুজো হিসাবে দক্ষিণা কালিকার পুজো হয়। হাসপাতাল চত্বরের একপ্রান্তে এই পুজো হয়। রামপুরহাট হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা মানুষজন মানত পূরণে বাবলাকালী মাতার কাছে পুজো দেন। পুজো ঘিরে হাসপাতাল পাড়া এলাকায় এ দিন জাতীয় সড়কেও যান নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশি। ছিল বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থাও।
সকাল থেকেই পুজোর ডালি নিয়ে ভক্তের সমাগম হতে থাকে। দোকানিরাও জাতীয় ভাঁড়শালা পাড়া মোড় থেকে জাতীয় সড়কের ধারে পুজোর দু’তিন রকমের ফল, ধূপকাটি, বাতাসাভর্তি বিভিন্ন দামের ভোগের প্যাকেট নিয়ে পসার সাজিয়ে বসে থাকেন। হাজার হাজার পূণ্যার্থী এই পুজোয় বাইরে থেকে এসে মণ্ডপ চত্বরে রাত জাগেন।
অন্য দিকে দক্ষিণা কালিকা মাতার পুজো উপলক্ষে রামপুরহাট শহরে লোটাস প্র্বেস মোড়ের গলিতে উত্তরায়ণ ক্লাব, রামপুরহাট কামারপট্টি যুবকবৃন্দের পুজো ঘিরেও উন্মাদনা রয়েছে। এই দুই পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা কয়েক বছর যাবৎ চন্দননগর থেকে আলোকসজ্জা আনছেন। এ বছরও তেমনই আয়োজন থাকছে। আলোর সেই রোশনাই দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ।
লোটাস প্রেস মোড়ের গলিতে উত্তরায়ণ ক্লাব এ বার চন্দননগরের একটি সংস্থা থেকে আলোকসজ্জা এনেছে। ইতিমধ্যে লোটাস প্র্বেস মোড় লাগোয়া পুকুর পাড় এলাকায় আলোর ছ’টায় ফুটেছে ভারত মাতার রূপ। সেখানে একদিকে জাতীয় সংহতির রূপ হিসাবে একই ফ্রেমে আলোর ঝলকানিতে মন্দির, মসজিদ, গির্জা যেমন ঠাঁই পেয়েছে, তেমনই জাতীয় পশু আলোর ছ’টায় ফুটে উঠছে। পুকুর পাড়ের মাঝখানে আলোকসজ্জায় কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে তুলে আনা হয়েছে। সুউচ্চ দুবাই টাওয়ার আলোকমালায় ফুটে উঠছে। ওই চত্বরে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডে শিবের নৃত্য দেখানো হবে। এই পুজোয় রামসীতা মন্দিরের সুউচ্চ গেট যেমন থাকবে, তেমনই একটি গেট আলোকসজ্জায় রাঙিয়ে তোলা হবে।
কামারপট্টি যুবকবৃন্দের দক্ষিণা কালিকা মাতার পুজোতেও থাকছে জাঁক। এখানেও রয়েছে চন্দননগরের আলো। দেশবন্ধু রোড, জে এল বন্দ্যোপাধ্যায় রোড-এ আলোকসজ্জার মাধ্যমে জোকারের খেলা, কোথাও সুউচ্চ গেটে গ্লোবের ভিতর মোটরবাইকের খেলা দেখানো হবে। হাতি-ঘোড়ার খেলাও দর্শকদের মন কাড়বে বলে উদ্যোক্তারা আশাবাদী। এই দুই পুজো ঘিরে এলাকায় রীতিমতো মেলা বসে যায়।
এই দুই পুজোর উদ্যোক্তাদের পক্ষে সঞ্জয় বর্মণ, বাপি মুখোপাধায়, অরূপ দত্ত, উৎপল পালেরা জানালেন, ক্লাবের সদস্যদের চাঁদা ছাড়াও এলাকার আশপাশ এলাকার উৎসব প্রিয় মানুষের সহযোগিতায় এই পুজো হয়। রামপুরহাট শহরের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় শ্রীফলা মোড়ে দক্ষিণা কালিকা মাতার পুজোতেও এ বার মণ্ডপসজ্জা দর্শকদের মন টানবে বলে উদ্যোক্তারা আশাবাদী। এখানেও আলোর রোশনাইয়ে এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত সাজানো হয়েছে।
শহরের শ্রীফলা, চাঁদমারি ফটক দুয়ার এবং ব্যাঙ্ক রোডের উপর সর্বমঙ্গলা মন্দিরে দক্ষিণা কালিকা মাতার পুজো ঘিরে দর্শনার্থীদের ঢল নামে এ দিন।