Kurumi Community

ফের কুড়মিদের রেল অবরোধে শঙ্কার মেঘ

আদিবাসী কুড়মি সমাজের দাবি, গত বছর সেপ্টেম্বরে রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের পদস্থ কর্তার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৪
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আবার পুজোর মুখে টানা রেল অবরোধ করতে যাচ্ছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। এতে গত বছরের মতো এ বারও পুজোর বাজার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ।

Advertisement

কুড়মি সম্প্রদায়কে জনজাতি তালিকাভুক্ত করা, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সারনা ধর্মের পৃথক কোড চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে কুড়মিদের বিভিন্ন সংগঠন। আদিবাসী কুড়মি সমাজের দাবি, জনজাতি স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে বারবার কেন্দ্রীয় সরকারকে সংশোধিত সিআরআই (কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট) রিপোর্ট পাঠাতে অনুরোধ করা হলেও লাভ হয়নি। তাই ফের আন্দোলনে নামতে হচ্ছে।

একই দাবিতে গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর পুরুলিয়ার কুস্তাউর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে কয়েকদিন ধরে রেল অবরোধ এবং পাশের রাস্তা অবরোধ করেছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। সংগঠনের মূল মানতা (মুখ্য উপদেষ্টা) অজিত মাহাতো জানিয়েছেন, এ বারও ২০ সেপ্টেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গের ওই দুই স্টেশনের সঙ্গে ওড়িশার ভঞ্জপুরম ও জামশুলি এবং ঝাড়খণ্ডের নিমডি, মনোহরপুর, মুরি ও গোমো স্টেশনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ শুরু করা হবে। ওই দুই রাজ্যে কুড়মিদের বিভিন্ন সংগঠন অবরোধে নামবে।

Advertisement

আদিবাসী কুড়মি সমাজের দাবি, গত বছর সেপ্টেম্বরে রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের পদস্থ কর্তার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছিলেন। সংগঠনের মূল মানতা অজিতের দাবি, ‘‘রাজ্য সরকার কথা রাখেনি। কেন্দ্রের আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রক ‘ফারদার জাস্টিফিকেশন’ সম্পর্কিত যে রিপোর্ট চেয়েছিল, রাজ্য তা কেন্দ্রের কাছে পাঠায়নি। সে কারণেই আমরা ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছি।’’

সংগঠনের দাবি, তিন রাজ্যের আটটি স্টেশনে অবরোধ কর্মসূচির বিষয়টি তাঁরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র দফতর, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে লিখিত ভাবে জানিয়েছে। কিন্তু কোনও তরফেই তাঁদের বৈঠকে ডাকা হয়নি। অবরোধের আগে রাজ্য ওই রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠিয়ে দিলে, তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেবেন।

গত বছর টানা পাঁচ দিন কুস্তাউর স্টেশন অবরুদ্ধ হওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা ভোলেননি সাধারণ মানুষ। ব্যবসায়ীদেরও পুজোর মুখে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল। পুরুলিয়া চেম্বার অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির জেলা সম্পাদক বামাপ্রসাদ পুইতন্ডি বলেন, ‘‘‘পুজোর আগে ফের টানা অবরোধ হলে ব্যবসায়ীরা যেমন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন, সাধারণ মানুষেরও দুর্ভোগ বাড়বে। দাবি আদায়ে কেউ আন্দোলন করতেই পারেন। কিন্তু সাধারণ মানুষকে সমস্যার মধ্যে ফেলে দাবি আদায়ের আন্দোলনের কতটা যৌক্তিকতা রয়েছে? আন্দোলনকারীদের এটা ভাবা দরকার।’’ অনেকের দাবি, বিষয়টিতে অনেক রাজ্য জড়িত। তাই আন্দোলনকারীরা দিল্লিতে গিয়ে বরং আন্দোলন করুন। তবে অজিত মাহাতোর দাবি ‘‘মানুষজন সমস্যায় পড়বেন বলে তাঁদের কাছে আগাম ক্ষমা চাইছি। কিন্তু রাজ্য সরকার ওই রিপোর্ট পাঠায়নি বলেই রেল অবরোধ কর্মসূচি নিতে বাধ্য হয়েছি। এটা আমাদের জাতিসত্তার লড়াই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন