Petrol Diesel Price Hike

পেট্রলের সেঞ্চুরি, নাভিশ্বাস জনতার

পেট্রোল-ডিজেলের এই আকাশছোঁয়া দাম বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে দুষেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মুরারই শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২১ ০৫:৪২
Share:

একশো পার পেট্রল। রামপুরহাটের পেট্রল পাম্পে। নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যের নানা এলাকা আগেই দেখেছে। এ বার পেট্রলের শতরানের সাক্ষী হল বীরভূমও। পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ডিজেলের দাম। জ্বালানির এই লাগামছাড়া বৃদ্ধিতে সমস্যায় গাড়ির মালিক থেকে সাধারণ বাসিন্দারা।

Advertisement

রবিবার মুরারইয়ে ১০০টাকা ০৩পয়সা লিটারে পেট্রল কিনতে বাসিন্দাদের কার্যত নাভিশ্বাস উঠেছে। একই দাম দেখা গিয়েছে রামপুরহাটের একটি পাম্পেও। পেট্রলের দাম সেঞ্চুরি করে ফেলার ফলে সমস্যায় পড়েছেন মোটর বাইক ও ছোট গাড়ির মালিকরা। তাঁরা জানান, এই ভাবে পেট্রল ও ডিজেলের দাম বেড়ে চলার ফলে হু হু করে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও আনাজের দাম। মুরারই ও নলহাটি এলাকারর অসংখ্যা মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। পকেটে টান পড়েছে মধ্যবিত্ত পরিবারেও। একশো টাকার বেশি পেট্রলের দাম পৌঁছে যাওয়ায় ছোট গাড়ির ভাড়াও বেড়েছে।

এই এলাকার অনেক রোগী চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। আগে রামপুরহাট যেতে ছোট গাড়ির ভাড়া ছিল এক হাজার টাকা। এ দিন ভাড়া বেড়ে হয়েছে ১৩০০ থেকে ১৫০০টাকা। ফলে সমস্যায় পড়েছেন দুঃস্থ রোগী ও তাঁদের পরিবার। কনকপুরের এক রোগী আলাউদ্দিন শেখ বলেন, ‘‘প্রচণ্ড পেটে ব্যথা নিয়ে মুরারই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। ব্যথা না কমায় রামপুরহাট হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এত টাকা গাড়ি ভাড়া দেব না ওষুধ কিনব কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। তেলের দাম কম হলে আমাদের মত দুঃস্থ মানুষজনের সুবিধে হত।’’

Advertisement

ডিজেলের দামও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে। এ দিন ডিজেলের দাম ছিল ৯২ টাকা ৮১ পয়সা। ফলে রাজগ্রাম ও নলহাটি পাথর শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ লরি মালিক রাস্তায় লরি চালাচ্ছেন না। অধিকাংশ মালিকের আক্ষেপ, যে সময় ৭০ টাকা ডিজেলের দর ছিল সেই সময় রাজগ্রাম থেকে পাথর কলকাতা পৌঁছতে যে টাকা খরচ হত এখনও সেই ভাড়ায় পাথর পৌঁছতে হচ্ছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। এক মালিকের কথায়, ‘‘তেলের খরচ, চালক-খালাসির বেতন, খাওয়া খরচ, রাস্তার কর ছাড়াও আনুসাঙ্গিক খরচ নিয়ে দুই থেকে তিনহাজার টাকা আয় হয়। এই টাকা ছাড়াও লরি কেনার কিস্তির দিয়ে উল্টে বাজার থেকে দেনা করতে হচ্ছে। তাই লরি চালানো বন্ধ করে রেখেছি।’’ লরি মালিক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘‘ঊর্ধমুখী তেলের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাড়া না বাড়লে আমাদের লরি ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। সরকারের কাছে আবেদন এই বিষয়ে নজর দিলে গাড়ি মালিকরা ও তাঁদের পরিবার বেঁচে যাবে।’’ অন্য এক গাড়ির মালিক ইসমাইল শেখ বলেন, ‘‘করোনা আবহে সরকারের বিধি নিষেধের ফলে অনেক দিন ধরে লরি বন্ধ হয়ে রয়েছে। এখন যা পরিস্থিতি অনেক লরি মালিক বাচ্চাদের স্কুলের বেতন পর্যন্ত দিতে পারছেন না।’’

পেট্রোল-ডিজেলের এই আকাশছোঁয়া দাম বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে দুষেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। তৃণমূলের রামপুরহাট মহকুমার পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পেট্রল একশো টাকার বেশি, ডিজেলের দামও নব্বইয়ের ঘর ছুঁয়েছে। গ্যাসের দামও বেড়ে চলেছে। বিজেপি সরকার যে নীতি নিয়ে চলছে তাতে কিছুদিন পরে সাধারণ মানুষকে না খেতে পেয়ে মরতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন