হাসপাতালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ব্লাড ব্যাঙ্ক। আর সেই দফতরেরই টেলিফোন বিকল দীর্ঘদিন ধরে। বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ঘটনা।
ওই ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা যায়, সেখানে ৬০০ ইউনিট রক্ত সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে। কর্মী রয়েছেন পাঁচ জন। আপৎকালীন পরিস্থিতি ছাড়াও প্রসূতি বিভাগ এবং প্রায় ৩১৫ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী এই ব্লাড ব্যাঙ্কের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্কের টেলিফোন খারাপ থাকায় অনেকেই ভুগছেন। তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন।
নাচনজাম গ্রামের তারাচাঁদ ভুঁই, চাতরা মোড়ের দিলীপ দে, আমড়াল গ্রামের খোকারাম চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘আমরা দিনে ১০ থেকে ১২ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে দূরদূরান্তের গ্রাম থেকে হাসপাতালে আসি। টেলিফোন খারাপ থাকায় রওনা দেওয়ার আগে জানতেও পারি না, সেই সময়ে ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্তের জোগান কেমন। ওঁরা একটা মোবাইল নম্বর দিয়েছেন, কিন্তু তাতে সব সময় পাওয়া যায় না। অনেক সময় এমনও হয়, অসুস্থ শিশুকে নিয়ে এসে জানতে পারি প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত নেই।’’
ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল অফিসার রামপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি ছয় মাস এখানে এসেছি। কিন্তু তার আগে থেকেই টেলিফোনটি খারাপ। ব্লাড ব্যাঙ্কের টেলিফোন খারাপের কোনও অজুহাত হয় না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি।’’ তিনি জানান, তাঁরা বিকল্প হিসেবে একটি মোবাইল নম্বর নোটিস বোর্ডে দিয়েছেন। হয়তো যান্ত্রিক কারণে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
বিষ্ণুপুর থ্যালাসেমিক গার্জেন সোসাইটির সম্পাদক প্রবীর সেন বলেন, ‘‘নোটিস বোর্ডে নম্বরটি দেখতে তো অফিসে আসতে হবে। আপৎকালীন দুর্ঘটনা ঘটলে বিভিন্ন জায়গাতে ব্লাড ব্যাঙ্কের যে ল্যান্ডলাইনের নম্বর বিজ্ঞাপনে দেওয়া আছে, তাতেই তো যোগাযোগ করবেন। তখন কী হবে?’’
বিষ্ণুপুর টেলিফোন অফিসের এসডিওটি স্বপনকুমার যশ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন বিল না দেওয়াই লাইনটি কাটা আছে। তবে যেহেতু জরুরি পরিষেবার লাইন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আবেদন করলে সংযোগ দেওয়া হবে।’’ বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সুপার পৃথ্বীশ আকুলি বলেন, ‘‘এ রকম হওয়ার তো কথা নয়। আমি খোঁজ নিচ্ছি।’’