ভাল ছবি চাই, সিভিকদের হাতে এ বার ক্যামেরাও

অন্যেরা তখন শিখছেন কোনও বিষয়ের ছবি তুলতে হলে কী ভাবে ফ্রেম করতে হয়। ক্যামেরার শাটার, অ্যাপারচার, আইএসও-র গুরুত্বই বা কী।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৮
Share:

জেলা পুলিশের উদ্যোগে ফটোগ্রাফিক কর্মশালা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

চলছে ফটোগ্রাফি-র কর্মশালা। উপস্থিত বেশ কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ার। ডিজিটাল এসএলআর-এর ‘ভিউ ফাইন্ডারে’ চোখ রেখেছেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার।

Advertisement

অন্যেরা তখন শিখছেন কোনও বিষয়ের ছবি তুলতে হলে কী ভাবে ফ্রেম করতে হয়। ক্যামেরার শাটার, অ্যাপারচার, আইএসও-র গুরুত্বই বা কী।

যে কোনও এলাকার গুরুত্বপূ্র্ণ তথ্য সংগ্রহই হোক কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ। সর্বদা পুলিশের পাশে ছায়াসঙ্গী এখন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। এ বার তাঁদেরই কয়েক জনকে দেখা যাবে ফটোগ্রাফারের ভূমিকায়। বীরভূম জেলা পুলিশ পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। ছবি তোলার শখ রয়েছে, জেলার মোট ২৪টি থানা থেকে এমন দু’জন করে বেছে নিয়ে মোট ৪৮ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে ছবি তোলার খুঁটিনাটির প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার ছিল তেমনই একটি কর্মশালা। সামনের দিনে আরও এমন কর্মশালা হবে। তবে শুধু ডিএসএলআর নয়, ভাল মোবাইল ক্যামেরা দিয়েও কী ভাবে রেকর্ড ফটোগ্রাফি করা সম্ভব, সেই বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিঅ্যান্ডটি) অভিষেক মণ্ডল। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন?

Advertisement

জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘বিভিন্ন থানায় ডিএসএলআর ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু সেগুলিকে চালানোর লোক নেই। পুলিশের বিভিন্ন কাজে সঠিক মানের ছবি উঠুক এবং সেই ছবিগুলিকে যথাযথ কাজে লাগানোর ভাবনা থেকেই থানায় থানায় ছবি তুলিয়ে ইউনিট গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ রাজ্যে এটা প্রথম কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সেটা বলা যাবে না। তবে, রাজ্যের অনেক থানায় ভাল ছবি তোলার ব্যবস্থা রয়েছে।’’

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনও অপরাধমূলক ঘটনার তদন্তে, অপরাধীদের রেকর্ড রাখতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কিংবা জনসংযোগ বৃদ্ধি— পুলিশের এমন নানাবিধ কাজের ‘ডকুমেন্টেশন’ প্রয়োজন। সেই কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ স্থিরচিত্র ও ভিডিও। কিন্তু, অধিকাংশ সময় মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে অপটু হাতে তোলা সেই সব ছবির গুণমান ভাল হয় না। এমনকি পুলিশের ভাল কাজ, যেটাকে পুলিশি পরিভাষায় ‘কমিউনিটি পুলিশিং’ বলা হয়, সেই সব কাজের জন্য তোলা ছবিরও বড় প্রিন্ট নেওয়া যাচ্ছে না। কিছু কিছু সময় বাইরে থেকে পেশাদার আলোকচিত্রীদের নিয়ে আসা হলেও পুলিশের অধিকাংশ কাজে গোপনীয়তা রক্ষা করার বিষয়টি জড়িয়ে থাকে। তাই প্রতিটি থানায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের মধ্যে থেকেই ফটোগ্রাফার তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

ফটোগ্রাফির চর্চা যাঁরা করেন, তাঁদের মতে, কারও হাতে ভাল মানের মোবাইল ক্যামেরা থাকলেও তাঁর ছবি তোলার নান্দনিক জ্ঞান বা কী ভাবে ছবি বা ভিডিয়ো তোলা উচিত, সেই সম্বন্ধে সঠিক ধারণা না থাকার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঠিকঠাক মানের ছবি বা ভিডিয়ো তোলা নয়। মোবাইলে ছবি তোলার আরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। উপযুক্ত আলো না থাকলে গতিশীল বিষয় বস্তুর ছবি তোলা মোটেও সহজ নয় মোবাইলে। অন্য দিকে, ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডিএসএলআর আরও কঠিন। কিন্তু মোবাইল ক্যামেরার থেকে অনেকগুণ ভাল ছবি তোলা সম্ভব। কিন্তু, সে ক্ষেত্রে ক্যামেরার বিষয়ে মোটামুটি একটা ধারণা থাকতেই হবে আলোকচিত্রীকে। অ্যাপারচার, শাটার প্রায়োরিটি না

ম্যানুয়েল মোডে ছবি তুলতে হবে, অটো মোডে না ফ্ল্যাশ দিয়ে ছবি তোলা হবে, কোন লেন্স ব্যবহার হবে—এমন নানা জিনিস মাথায় রাখতে হয়। খেলার ছবি এবং পোর্ট্রেট—এই দু’ধরনেক ছবি তোলার যথেষ্ট তফাত। সেই জ্ঞান সঠিক ভাবে না থাকলে সমস্যা থাকবে। ছবি তোলার জন্য নির্দিষ্ট কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়াকে সেই ন্যূনতম প্রশিক্ষণই দিতে চাইছে জেলা পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন