•দ্বারস্থ: মহকুমাশাসকের অফিসে কুড়ানচন্দ্র মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
খড়ের ছাউনি দেওয়া ঘর যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। এই আশঙ্কায় পোলিও আক্রান্ত এক বৃদ্ধ পঞ্চায়েত অফিস থেকে মহকুমা শাসকের অফিসে ট্রাইসাইকেলে ঘুরে আর্জি জানাচ্ছেন। অভিযোগ, নিয়মের গেরোয় আবাসন প্রকল্পে তাঁর ঘর পাওয়া আটকে গিয়েছে।
রাধানগর গ্রামের শর্মাপাড়ার বাসিন্দা কুড়ানচন্দ্র মণ্ডলের জন্ম থেকে ডান পায়ে পোলিওর সমস্যা। ৬৬ বছরের বৃদ্ধ জানান, স্ত্রী লক্ষ্মী মণ্ডলকে নিয়ে তিনি খড়ের ছাউনি দেওয়া ভেঙ্গে পড়া মাটির বাড়িতে থাকেন। পার্শ্বশিক্ষক ছেলে আলাদা থাকেন। মাঝে মধ্যে বাবা-মাকে কিছু টাকা দেন। তবে সংসার চালাতে তাঁর মূল ভরসা সমাজকল্যাণ দফতর থেকে পাওয়া মাসে সাড়ে সাতশো টাকার ভাতা। দু’বেলা ভাত জোগাড় করতে ব্যতিব্যস্ত এই পরিবার আর ঘর সংস্কার করতে পারছে না। কুরানবাবুর কথায়, ‘‘বৃষ্টি নামলে ছাতা নিয়ে বসে থাকি। মনে হয় এই বুঝি মাটির দেওয়াল চাপা পরে মরে গেলাম।’’ তাঁর আক্ষেপ, বহু দিন ধরে স্থানীয় রাধানগর পঞ্চায়েতে ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে ঘর চেয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু কেউ কর্ণপাত করেনি।
সম্প্রতি বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার ট্রাইসাইকেলে বিষ্ণুপুর মহকুমাশাসকের অফিসে তিনি এসেছিলেন। সব শুনে মহকুমাশাসক ময়ূরী ভাসু বিষয়টি দেখতে বলেন বিষ্ণুপুরের বিডিও জয়তী চক্রবর্তীকে। যদিও বিডিও বলেন, ‘‘আমি দু’বার নিজে তাঁর বাড়িতে তদন্তে গিয়েছিলাম। কুড়ানবাবু বিপিএলের ৫ নম্বর শ্রেণিতে রয়েছেন। শুনেছি তাঁর ছেলে ভাল চাকরি করেন। যে নিয়মে ইন্দিরা আবাসন দেওয়া হয়, সেই সুবিধা কুরানবাবু পাওয়ার যোগ্য নয়। অন্য আবাসন প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া যায় কি না দেখা হবে।’’
রাধানগর পঞ্চায়েতের প্রধান বাসন্তী ঠাকুরও দাবি করেছেন, ‘‘গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ি দেওয়ার জন্য নাম চাওয়া হলে, ওঁনার নাম অবশ্যই পাঠানো হবে।’’