সার্কিট হাউস লাগোয়া এলাকায় অবৈধ দখলদারি উচ্ছেদ। ছবি:অভিজিৎ সিংহ।
বেআইনি দখল হঠাতে মাঠে নামল পুলিশ-প্রশাসন। শনিবার বাঁকুড়া শহরের ভৈরবস্থানে সার্কিট হাউসের চারপাশের অধিকাংশ বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলা হয়। এ দিন সকাল থেকে দুপুর প্রায় ১টা পর্যন্ত ভৈরবস্থানের সার্কিট হাউস সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চলে। নেতৃত্বে ছিলেন মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালা এবং বাঁকুড়া সদর থানার আইসি রাজর্ষী দত্ত। প্রায় ১২০ জন পুলিশ কর্মী এলাকায় মোতায়েন ছিলেন। অভিযান চলাকালীন পুলিশ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। বাস এবং গাড়ি কলেজ মোড় দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সার্কিট হাউসকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক জমির উপরে গড়ে ওঠা অন্তত ৩৫ টি নির্মান ভেঙে ফেলা হয়েছে। বেশ কিছু নির্মাণ রয়েছে, যেগুলি মূলত ব্যক্তিগত জমিতে গড়ে প্রশাসনিক জমির কিছু অংশ দখল করে নিয়েছে। ওই নির্মাণগুলি এ দিন ভাঙা হয়নি। নির্মাণকারীরা যাতে নিজেরাই ভেঙে নেন তার জন্য তিন দিন সময় দিয়েছে প্রশাসন।
মহকুমাশাসক বলেন, “এ দিনের অভিযান নির্বিঘ্নেই অভিযান শেষ হয়েছে। যে নির্মাণগুলি জমি ছাড়িয়ে প্রশাসনিক জায়গায় এগিয়ে এসেছে এ বারে সেগুলি ভাঙা হবে। অভিযানে কোনও বাধা বরদাস্ত করা হবে না।’’ এ দিকে ফের অভিযান শুরুর আগে ব্যবসায়ীরা মহকুমাশাসককে আলোচনায় বসার দাবি জানিয়েছেন। মহকুমাশাসক আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
সম্প্রতি বাঁকুড়ায় গন্ধেশ্বরী নদী দখল মুক্ত অভিযান শেষ করেছে প্রশাসন। তার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সার্কিট হাউস চত্বরের প্রশাসনিক জমি দখল মুক্ত করার অভিযানও শুরু হল। অভিযানের ব্যাপারে আগে থেকেই এলাকায় মাইক নিয়ে প্রচার করেছিল জেলা প্রশাসন। ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁদের ওজর-আপত্তি অরূপবাবুর কাছে ধোপে টেকেনি। তবে ব্যবসায়ীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়া নিয়েও ইতিমধ্যেই প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন জেলা সভাধিপতি। সম্প্রতি মুকুটমণিপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য জেলা পরিষদ ছোট স্টল গড়ে দিয়েছে। অরূপবাবু বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত রাস্তা ছেড়ে ভৈরবস্থানেও ব্যবসায়ীদের জন্য সুসজ্জিত স্টল বানানো যেতে পারে কি না তা নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলব। স্টল হলে পুরসভার বছরভর একটা নির্দিষ্ট আয়ও হবে।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে এই এলাকায় দোকান করে সংসার চালিয়ে আসছি। সেটাই ভেঙে দেওয়া হল। অবিলম্বে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করা দরকার।’’