অকুস্থলে: খোলা হচ্ছে পোঁটলা। সোমবার আদ্রায়। নিজস্ব চিত্র
পুজো কেটেছে নির্বিঘ্নেই। বিসর্জন বাকি মোটে আর দু’টি পুজোর। সোমবার বেশ খোশ মেজাজেই আদ্রা থানায় এসেছিলেন পুলিশ কর্মীরা।হঠাৎ স্বস্তি উঠল শিকেয়। চোখ কপালে।
মোবাইলে খবর এল, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে যাওয়ার পথে পড়ে রয়েছে পোঁটলা। ভিতর থেকে পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে এলাকায়। শেষ পর্যন্ত পোঁটলা খুলে মিলেছে একটি অ্যালসেসিয়ান কুকুরের দেহ।
ঘটনার শেষটা এমন হলেও দীর্ঘক্ষণ নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে পুলিশ কর্মীদের। প্রথমে ‘দেহ’ পড়ে থাকার খবর। তার পরেই আবার এলাকার সোর্সের ফোন— ‘‘তাড়াতাড়ি আসুন। লোক জমতে শুরু করেছে।’’ হন্তদন্ত হয়ে সাদা পোশাকেই পুলিশকর্মীদের নিয়ে অকুস্থলে ছোটেন সাব ইন্সপেক্টার সুপ্রতীক মণ্ডল। ততক্ষণে পুলিশ কর্মীদের অনেকেই ধরে নিয়েছেন, দেহ উদ্ধার হবে। শনাক্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত হবে। মামলা রুজু হবে। তদন্ত হবে। সময় মতো সেই তদন্ত শেষ না হলে কড়া কথা শুনতে হবে।
তাঁরা যখন পৌঁছলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রাউন্ড থেকে বিদ্যুৎ বণ্টণ সংস্থার অফিসে যাওয়ার রাস্তার পাশে ‘বস্তাবন্দি দেহ’ ঘিরে ভালই লোক জমেছে। নাকে-মুখে রুমাল চেপে দাঁড়িয়ে পড়েছেন পথচলতি লোকজন। চলছে জল্পনা। উড়ছে খবর— নির্ঘাৎ কোনও শিশুকে খুন করে ফেলে দিয়ে গিয়েছে কেউ।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেই পুলিশ কর্মীরা রাস্তার পাশে ছোট গর্ত থেকে বস্তাটি তুলে খুলে ফেলেন। ভালই বেগ পেতে হয়। কারণ, প্রথমে বস্তার বাঁধন খুলতে দেখা যায় চাদরের সঙ্গে লোহার সরু তার দিয়ে বাঁধা আছে ‘দেহটি’। সেই তার খোলা হয়। বেরিয়ে আসে কুকুরের দেহ। বস্তায় ভরে সেটি নিয়ে থানায় ফিরে যায় পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ অনুমান করছে, কুকুরটি কারও পোষা ছিল। বয়সজনিত কারণে মৃত্যু হওয়ায় এ ভাবে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় হতবাক শহরের পশুপ্রেমীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহটির সৎকার করা হবে।