আজ হাজিরা সিউড়িতে

খুনের নালিশ, ভোপালে ধৃত সাধুবেশী স্বামী

সাঁইথিয়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রথতলা পাড়ার খুন হন মণি বন্দ্যোপাধ্যায় (৩০)। ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা মণিদেবীর দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী বলাই চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্ত্রী-খুনের পরেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন। নিয়েছিলেন সাধুর ছদ্মবেশও। কিন্তু, শেষরক্ষা হল না! সিআইডি-র দাবি, ঘটনার তিন বছর পরে ভিন রাজ্য থেকে তাদের হাতে ধরা পড়েছে অভিযুক্ত স্বামী বলরাম চট্টোপাধ্যায়। অভিযুক্তকে ১১ এপ্রিল মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে গ্রেফতার করা হয়। ভোপালের সিজেএম আদালত থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃতকে নিয়ে শনিবারই সিউড়ি পৌঁছেছে সিআইডি। আজ, রবিবার ধৃতকে সিজেএম আদালতে হাজির করানো হবে। ২০১৫ সালের ১৩ অগস্টের ঘটনা। সাঁইথিয়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রথতলা পাড়ার খুন হন মণি বন্দ্যোপাধ্যায় (৩০)। ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা মণিদেবীর দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী বলাই চট্টোপাধ্যায়। এলাকার অভিজাত পরিবারের ওই মহিলার খুনের কথা চাউর হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল শহরে।

Advertisement

ওই বধূর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে মহম্মদবাজারের গণপুরের বাসিন্দা বিবেকানন্দ সরকারের মেয়ে মণির সঙ্গে সাঁইথিয়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিয়ে হয়। তাঁদের দুই সন্তান হয়।
উজ্জ্বলবাবু সপরিবার রথতলা পাড়ায় বাড়ি করে সেখানে সরে আসেন। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে উজ্জ্বলবাবুর মৃত্যু হয়। বছর দু’য়েক বাদে উজ্জ্বলবাবুরই বন্ধু বলাই ওরফে ভানুকে বিয়ে করেন মণিদেবী। বলাইবাবুর বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের ফরিদপুর থানার গুনুটিয়া গ্রামে হলেও বিয়ের পরে তিনি মণিদেবীর সঙ্গে রথতলার ওই বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পর থেকে কার্যত বেকার দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর সঙ্গে মণিদেবীর সংঘাত শুরু হয় বলে জানা যায়। পরে শ্বশুর বিবেকানন্দবাবু জামাইকে একটি প্রসাধনীর দোকান করে দেন। তার পরেও অশান্তি থামেনি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে ঘুম ভেঙে মণিদেবীর বছর এগারোর ছেলে দেখে, শোওয়ার ঘরে নেই মা-বাবা। ছোট ঘরের দরজা খুলে দেখে রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। আর সেখানেই বিবস্ত্র অবস্থায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ে রয়েছে মায়ের নিথর দেহ। খাটের উপরে রক্তাক্ত ছোট কাটারি ও ছুরি। বাবা বাইরের দরজা বন্ধ করে বাইক নিয়ে চলে গিয়েছে জানায় সে। পরে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে। মণিদেবীর বাবা বিবেকানন্দবাবু জামাই বলরামের বিরুদ্ধে মেয়েকে খুন করার অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল সম্পত্তির জন্যই মেয়েকে খুন করেছে জামাই। পুলিশের অনুমানও তাই ছিল। কিন্তু তদন্ত শুরু করার পর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও অভিযুক্তের নাগাল পায়নি পুলিশ। ২০১৭ সালে মাঝামাঝি ওই মামলার তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি। আর তার পরেই মেলে সাফল্য।

Advertisement

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত ভার হাতে নেওয়ার পর সিআইডির কাছে খবর আসে, সাধুবেশে গুজরাত ও মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন অংশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলরাম। সেই খবর পেয়েই সিআইডির তদন্তকারী অফিসার অমরেশ মণ্ডলের নেতৃত্বে চার সদস্যের দল মধ্যপ্রদেশে যায় এপ্রিলের প্রথমেই। ১১ এপ্রিল সিআইডির জালে ধরা পড়েন সাধুবেশী বলরাম। সিআইডি সূত্রের খবর, স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন