ভুয়ো এডিজি ধৃত বাঁকুড়ায়

নীলবাতি লাগানো দু’টি গাড়িতে ‘ন্যাশনাল অ্যান্টি কোরাপশন ডিপার্টমেন্ট’-এর বোর্ড লাগিয়ে, নিজেদের সরকারি আধিকারিক বলে পরিচয় দিয়ে ট্রাক থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই করছিলেন কয়েকজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গঙ্গাজলঘাটি: শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১৫
Share:

আটক গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

আসল পুলিশের হাতে ধরা পড়ল নকল পুলিশ।

Advertisement

নীলবাতি লাগানো দু’টি গাড়িতে ‘ন্যাশনাল অ্যান্টি কোরাপশন ডিপার্টমেন্ট’-এর বোর্ড লাগিয়ে, নিজেদের সরকারি আধিকারিক বলে পরিচয় দিয়ে ট্রাক থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই করছিলেন কয়েকজন। তাঁদের মারধর খেয়ে পালিয়ে যাওয়া এক ট্রাক চালকের ফোন পেয়ে সেই নকল পুলিশদের গ্রেফতার করল বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার পুলিশ। বুধবার রাতে ছাতনা থেকে গঙ্গাজলঘাটি যাওয়ার রাস্তায় চুড়ুরিমোড় এলাকার ঘটনা। দুই গাড়ির চালক-সহ আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতেরা দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘ধৃতেরা নিজেদের ‘ন্যাশনাল অ্যান্টি কোরাপশন ডিপার্টমেন্ট’-এর লোক বলে প্রথমে পরিচয় দেয়। পরে জানা যায়, সব ভুয়ো।” নীলবাতি লাগানো দু’টি গাড়ি আটক করা হয়েছে। ধৃতেদের বিরুদ্ধে বেআইনি অস্ত্র মজুত, সরকারি জাল নথি ব্যবহার, ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বাঁকুড়া আদালত ধৃতদের ছ’জনকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজত ও দু’জনের ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেয়।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে চুঁচুড়ার বাসিন্দা অভিষেক রায় ও অরিজিৎ রায় দুই ভাই। তারাই এই চক্রের মূল পান্ডা বলে প্রাথমিক তদন্তের পর দাবি করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও ধৃতদের মধ্যে রয়েছে, বেলঘরিয়ার বাসিন্দা সুকান্ত ভট্টাচার্য, দুবরাজপুরের বাসিন্দা মৈনাক দাঁ, বারাবনির বাসিন্দা দুলাল দত্ত ও হুগলির বাসিন্দা বাপি দেবনাথ। ধৃত দু’টি গাড়ির চালক বসিরহাটের বাসিন্দা স্বরূপ মুখোপাধ্যায় ও চুঁচুড়ার বাসিন্দা সুশঙ্কর পালকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বুধবার রাত প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ দু’টি নীলবাতি লাগানো ‘ন্যাশনাল অ্যান্টি কোরাপশন ডিপার্টমেন্ট’-র বোর্ড সাঁটা গাড়ি নিয়ে চুড়ুরিমোড়ে দাঁড়িয়ে ছিল আট জন। ওই রাস্তায় যাওয়া দু’টি ট্রাক তারা আটকায়। তাদের আটকে দেওয়া একটি ট্রাকের চালক কোনওরকমে পালিয়ে গিয়ে মালিককে ফোন করে ঘটনাটি জানান। সব শুনে ওই ট্রাকের মালিকই পুলিশকে ফোন করে ঘটনার কথা বলে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে প্রথমে আটক করে ওই ব্যক্তিদের।

পুলিশের দাবি, ধৃত অভিষেক নিজেকে এডিজি বলে পরিচয় দিয়েছিল। যদিও জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সে ভেঙে পড়ে বলে দাবি পুলিশের। ট্রাকের মালিক শ্যামাপদ রায়ের অভিযোগ, “গাড়ির চালককে আটকে নিজেদের বড় অফিসার বলে পরিচয় দেয় ওরা। তারপর চালকের কাছে গাড়ির চালান দেখতে চায়। গাড়ির চালক চালান দিতে রাজি না হলে তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়। চালক কোনওরকমে ওদের হাত থেকে পালিয়ে গিয়ে ফোনে আমাকে সব জানায়।’’ তিনি জানান, সব শুনে মনে হয়েছিল, কোথাও গোলমাল রয়েছে। তার পরেই পুলিশকে ফোন করে ঘটনাটি বলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন