বেআইনি ভাবে কাশির সিরাপ মজুত করা ও বিক্রি করার অভিযোগে এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার নাম বর্ণালি দত্ত ওরফে মিতা। তিনি ঝালদার পোদ্দার পাড়া এলাকার বাসিন্দা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রবিবার পুলিশ বর্ণালীদেবীর বাড়িতে তল্লাশি চালায়। তাঁর বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণে কাশির ওষুধ মিলেছে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই কাশির সিরাপ অনেকে নেশা করার জন্যও কেনে। বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল, ঝালদায় কিছু বাড়ি থেকে এবং আরও কয়েকটি জায়গা থেকে এই ধরনের নেশার ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত মহিলাকে রবিবার পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয়। ওই কারবার কী ভাবে এলাকায় চলছে তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এই ওষুধ ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে ঝালদায় এই মহিলার কাছে আসত। তিনি প্রতিটি শিশি ২৫ টাকায় কিনে ৬০ টাকা করে বিক্রি করতেন বলে পুলিশের দাবি। বেশ কিছুদিন ধরে এই কারবার চলছিল বলে পুলিশের কাছে খবর ছিল। কুন্তলবাবু জানিয়েছেন, এই মহিলার একটি পারিবারিক ওষুধের দোকানও রয়েছে। সেই দোকানেও এ ধরনের ওষুধ বিক্রি হয় কি না তা জানতে ভেষজ নিয়ন্ত্রণ দফতরের সহায়তা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য সস্তায় নেশা করার জন্য এই ধরনের কাশির ওষুধ বা ড্রাগের ব্যবহার ঝালদায় যথেচ্ছ ভাবে রমরমিয়ে চলছিল বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, এ ভাবে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কাশির ওষুধ ব্যবহার করে নেশা করার ফলে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঝালদা পুরকর্তৃপক্ষের কানেও এই অভিযোগ গিয়েছিল। পুরসভা জানিয়েছিল, সেচনতনায় তারা প্রচারে নামবে।
সম্প্রতি কাশির সিরাপ নেশার জন্য বিক্রি বন্ধের ব্যাপারে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। বেআইনি ভাবে এ ধরনের ওষুধ বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন পুলিশ জানিয়েছিল, ঝালদায় এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সকলকেই গ্রেফতার করা হবে। এ দিকে জেলা ভেষজ নিয়ন্ত্রণ দফতরের আধিকারিক দেবজিৎ সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘‘ঝালদার ওই ওধুধের দোকানে আগে হানা দিয়ে আমরা এ ধরনের ওধুধ না পেলেও বেশ কিছু বেনিয়ম নজরে আসে। তার ভিত্তিতে ওই দোকান ১৫ দিনের জন্য সাসপেন্ডও করা হয়। আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি।’’ তিনি জানান, জেলার অন্য কোনও জায়গা থেকে অবশ্য এ ধরনের অভিযোগ নেই। কোনও ওষুধের দোকান এ ধরনের ওষুধ নেশা করার জন্য বিধি বহির্ভূত ভাবে বিক্রি করছে কি না তা খতিয়ে দেখতে ঝালদায় ফের অভিযান চালানো হবে।