এ বারও রক্ষা পেল না সতীঘাট কজওয়ে

শুক্রবার থেকে টানা নিম্নচাপের জেরে গন্ধেশ্বরীতে জলস্তর ব্যপক বেড়ে গিয়েছিল। সোমবার থেকেই কজওয়ে জলের তলায় চলে যাওয়ায় পারাপার বন্ধ ছিল। এ দিন সকালেই বাঁকুড়া শহরের দিক থেকে নদীর কজওয়েতে ওঠার রাস্তায় ফাটল দেখা যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ১০:২০
Share:

আবার: জলের তোড়ে ভেঙেছে সতীঘাট কজওয়ে লাগোয়া বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

এমনিতে মরা নদী হিসেবে পরিচিত হলেও গন্ধেশ্বরী বর্ষায় ঘুম কাড়ে বাঁকুড়াবাসীর। এ বছরও হয়েছে তা-ই। মঙ্গলবার রাত থেকে বাঁকুড়ায় বৃষ্টি থামতেই জলস্তর বেশ খানিকটা নেমেছে গন্ধেশ্বরীর। দেখা গিয়েছে, কজওয়েতে যাওয়ার রাস্তায় ফাটলের চিহ্ন। যার জেরে বুধবার থেকেই ওই কজওয়ের উপর দিয়ে যাতায়াত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

শুক্রবার থেকে টানা নিম্নচাপের জেরে গন্ধেশ্বরীতে জলস্তর ব্যপক বেড়ে গিয়েছিল। সোমবার থেকেই কজওয়ে জলের তলায় চলে যাওয়ায় পারাপার বন্ধ ছিল। এ দিন সকালেই বাঁকুড়া শহরের দিক থেকে নদীর কজওয়েতে ওঠার রাস্তায় ফাটল দেখা যায়। নদীর পাড়ে ধসের জেরে একটি গাড়িও আটকে পড়েছে।

গত বছর বর্ষাতেও গন্ধেশ্বরী নদীর কজওয়ের রাস্তার একপাশের অংশ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছিল। এ বারও হয়েছে সেটাই। ওই কজওয়েটিই কেশিয়াকোলের সঙ্গে বাঁকুড়া শহরের যোগাযোগের মাধ্যম। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভ, “প্রতি বছর বর্ষাতেই কজওয়েটি ভেঙে পড়ছে। সারাই করতে মাস কাবার হয়ে যায়। আমাদের ঘুরপথে বাঁকুড়া শহরে যেতে হচ্ছে।” এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি তুলেছেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবিটিকে যুক্তিযুক্ত বলে মানছেন বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তও। তিনি বলেন, “নতুন করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ওই কজওয়ে বানাতে হবে। না হলে এই সমস্যাটি মিটবে না। এই ব্যাপারে আমি মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর)-এর সঙ্গে কথা বলেছি। উনি লিখিত ভাবে জানাতে বলেছেন।”

Advertisement

এ দিকে বৃষ্টি একটু ধরতেই গন্ধেশ্বরীর পাশাপাশি জেলার অন্য নদ দ্বারকেশ্বরের জলস্তরও নেমেছে। বাঁকুড়ার জনজীবনও বেশ খানিকটা স্বাভাবিক হচ্ছে। এ দিন বাঁকি এলাকায় গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বরের মিলনস্থলে মাছ ধরার হিড়িক দেখা গেল। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন বাগ বললেন, “গ্রামের রাস্তা পর্যন্ত জল এসে পড়েছিল। আমরা প্রায় ঘরবন্দি হয়েই ছিলাম। আশপাশের চাষ জমি গুলিও জলের তলায় চলে গিয়েছিল। এক রাতেই সব স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে।”

একই ছবি দেখা গেল পুনিশোল জোড়েও। মাছের আশায় জাল ফেলছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে মুক্তার আব্বাস, সেখ কাদেররা বলেন, “জোড়ের জল রাস্তার উপর দিয়ে বইছিল। বৃষ্টি না হওয়ায় ফের জল নেমে গিয়েছে।” ওন্দার মাদারবনি এলাকায় বিড়াই নদীর কালভার্টে ধস নেমে মঙ্গলবার থেকেই বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ওই কালভার্টে সারাই কাজ শুরু হওয়ায় এদিনও ওই রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। সকাল থেকেই আকাশে মেঘের থাকলেও বৃষ্টি ছিল না। যদিও দুপুরের পরে ফের শুরু হয় বৃষ্টি। বাঁকুড়া জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “নিম্নচাপ ঘুরে না এলে জেলার পরিস্থিতি স্বাভাবিকই থাকবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন