থানায় মর্জিনা।—নিজস্ব চিত্র।
আরও একটি সাফল্য। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে দোকানের ঠিকানা দেখে এবং হোয়্যাটঅ্যাপের সাহায্য নিয়ে পুলিশ কর্মীরা বাড়ি ফিরিয়ে দিলেন এক মূক মহিলাকে।
গত শনিবার পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। পুলিশের কাছে খবর আসে, বাসস্ট্যান্ডে এক বোবা মহিলা উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করছে। তারপরে তাঁকে থানায় এনে বহু চেষ্টা করেও পরিচয় জানতে পারিনি পুলিশ। কিন্তু, মহিলার সঙ্গে থাকা ব্যাগ হাতড়াতে গিয়ে পুরুলিয়া-সাঁওতালডিহি রুটের একটি বাসের টিকিট পায় পুলিশ। সেই সূত্র ধরে বাসকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই মহিলা এক দিন আগে সাঁওতালডিহি এলাকা থেকে পুরুলিয়া আসেন। তারপর মানবাজার রুটের আর একটি বাস ধরে মানবাজারে গিয়ে ফের পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে ফেরেন। তখনই উদ্ধার করে পুলিশ।
এক পুলিশকর্মী জানাচ্ছেন, মহিলার সঙ্গে থাকা ব্যাগে একটি প্লাস্টিকের প্যাকেট মেলে। সেই প্যাকেটের বিজ্ঞাপনে বসন্তপুর লেখা ছিল। তা দেখে সদর থানার পুলিশ বোরো থানায় যোগাযোগ করে। ওই এলাকায় বসন্তপুর নামে একটি গ্রাম রয়েছে। কিন্তু, পরে জানা যায় সেখানে তাঁর বাড়ি নয়। সকলে যখন হতোদ্যম হয়ে পড়ছেন, তখন মুশকিল আসান হয়ে দেখা দেন পুরুলিয়া সদর থানার এক পুলিশ কর্মী। তাঁর বাড়ি হুগলির বসন্তপুরে। তিনি এই বোবা মহিলার ছবি তুলে নিজের গ্রামে পাঠাতেই কেল্লা ফতে!
এই পুলিশ কর্মীর মাধ্যমেই বাড়ির লোকজনকে খবর পাঠিয়ে মহিলার বাড়ির লোকজনের ছবি পাঠাতে বলা হয়। ওই পুলিশ কর্মীর মোবাইলে বাড়ির লোকজনের ছবি আসার পরে মহিলাকে দেখাতেই খুশিতে ভরে যায় ওই মহিলার চোখমুখ। মধ্যবয়সী ওই মহিলার নাম মর্জিনা বিবি। সোমবার সকালে মর্জিনার জামাইবাবু শেখ আবদুস ওয়াহেদ ও বোনপো বুলবুল মজনু খানাকুল থেকে পুরুলিয়া আসেন। জামাইবাবু-বোনপোর সঙ্গে দিদির বাড়ি রওনা হওয়ার আগে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি মর্জিনা। বেরোবার আগে পুলিশ কর্মী ও ওসি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে নমস্কার করে শুভেচ্ছা জানিয়ে গিয়েছেন।