যোগীর সভা থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ কার্তিকের খোঁজে হন্যে 

বিজেপি নেতৃত্ব ও কার্তিকের পরিবারের দাবি, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। যদিও ‘অপহরণ’ শব্দটি পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা নেই। পুলিশ তবে অপহরণের অভিযোগেই মামলা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা  

বলরামপুর শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

কার্তিক কোথায়? এই প্রশ্নের জবাব মিলল না বৃহস্পতিবারও। পুরুলিয়া ২ ব্লকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সভা থেকে মঙ্গলবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন বলরামপুরের ওই বিজেপি কর্মী। তারপর থেকে তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ এ দিন পর্যন্ত কোনও হদিস করতে পারেনি। হন্যে বলরামপুরের বিজেপি কর্মীরাও।

Advertisement

বিজেপি নেতৃত্ব ও কার্তিকের পরিবারের দাবি, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। যদিও ‘অপহরণ’ শব্দটি পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা নেই। পুলিশ তবে অপহরণের অভিযোগেই মামলা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত থেকেই কার্তিকের খোঁজে ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। নিখোঁজ ওই বিজেপি কর্মীর বাড়ি অযোধ্যা পাহাড়তলির ঘাটবেড়া-কেরোয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কর্মা গ্রামে। পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা এলাকার বিভিন্ন গ্রামেও মঙ্গলবার রাতে পুলিশ তল্লাশি চালায়। কিন্তু, কোনও সূত্রে মেলেনি।

Advertisement

বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, মঙ্গলবার রাতে দলের এক কর্মীকে ফোন করে কার্তিক বলেছিলেন, ‘দু’টি গাড়ি আমার পিছু নিয়েছে। উরমায় তৃণমূলের পার্টি অফিসের পিছনে লুকিয়ে রয়েছি। আমাকে বাঁচাও। পুলিশে খবর দাও।’ তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, কার্তিকের সেই ফোন ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া যায়নি। সেই রাত থেকে কার্তিকের ওই ফোন বন্ধ রয়েছে। বিজেপির বলরামপুর মণ্ডলের সভাপতি বাণেশ্বর মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘পুলিশ এখনও কার্তিকের খোঁজ পায়নি। খুবই উদ্বেগে রয়েছি আমরা।’’

পুলিশ জানিয়েছে, বলরামপুর বাজারে কার্তিকের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। তিনি বলরামপুরে একটি বাড়িও কিনেছেন। একটি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এজেন্ট হিসাবে কাজ করেন। তাঁর নিখোঁজ হওয়ার পিছনে সে সব কোনও কারণ কি না পুলিশকে তা ভাবাচ্ছে। সূত্র খুঁজতে ওই যুবকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও সূত্র পাওয়া যেতে পারে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

বলরামপুরের বিজেপি নেতা গোপাল কাটারুকা বলেন, ‘‘কার্তিক নিখোঁজ হওয়ার পরেই পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু, তার সঙ্গে ধার-দেনার যদি কোনও বিষয় থাকে, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। পুলিশ তা খতিয়ে দেখুক।’’ কার্তিকের দাদা বুধু গড়াই এ দিন বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলছেন যে ব্যাঙ্কের এজেন্ট হিসাবে কাজ করার জন্য ভাইয়ের নাকি দেনা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, কত টাকার দেনা হতে পারে? সে জন্য ভাই উধাও হয়ে যাবে, মানতে পারছি না। ভাই পুরুলিয়া শহরে একটা ঘড়ির দোকানে কাজ করত। পরে উরমায় নিজের দোকান করে। সেই দোকান তুলে দিয়ে পরে বলরামপুরে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করে।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যোগীজির সভা থেকে ফেরার পথেই কার্তিক নিখোঁজ হয়েছেন। কেউ অপরহণও করতে পারে। পুলিশকে তা খুঁজে বার করতে হবে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘আমরাও চাই পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন