Lok Sabha Election 2024

কোন দিকে ঝুঁকে নতুন ভোটার, চর্চা

পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১ নভেম্বর প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা থেকে ৩১,০৬৯ জন ভোটারের নাম বাদ পড়েছে চূড়ান্ত তালিকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:১৬
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় পুরুলিয়ায় ভোটার সংখ্যা বেড়েছে ৬০ হাজারেরও বেশি। যাঁদের মধ্যে সিংহ ভাগই তরুণ-তরুণী। লোকসভা নির্বাচনে তাঁদের সমর্থন কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। পুরুলিয়ায় মোট ভোটার বেড়েছে ৬০,৫৫২ জন। তাঁদের মধ্যে ১৮-১৯ বছরের ভোটারের সংখ্যা ৫৯,৬০৮। বিভিন্ন যুক্তি হাজির করে শাসক ও বিরোধী, দু’পক্ষেরই দাবি, তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের সমর্থন তাদের পক্ষেই যাবে।

Advertisement

পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১ নভেম্বর প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা থেকে ৩১,০৬৯ জন ভোটারের নাম বাদ পড়েছে চূড়ান্ত তালিকায়। জেলা নির্বাচন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মজুমদার জানান, অনেক ভোটারের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অল্প হলেও কিছু ‘ভুয়ো ভোটারের’ (একাধিক জায়গায় নাম রয়েছে যাঁদের) অস্তিত্বও মিলেছিল। চূড়ান্ত তালিকায় এক জায়গা থেকে তাঁদের নাম বাদ গিয়েছে।

চূড়ান্ত তালিকা বলছে, জেলার ন’টি বিধানসভায় পুরুষ ভোটারের সংখ্যা হয়েছে ১২,০৮,২৬১। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১১,৮০,৯৯৩। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ২২ জন। মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩,৮৯,২৭৬। জেলা নির্বাচন আধিকারিক জানান, ১৮-১৯ বছর বয়সি নতুন প্রজন্মের ৫৯,৬০৮ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৩৪,৩৮৯ জন। মহিলা ২৫,২১৯ জন।

Advertisement

নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মধ্যে মহিলারা সংখ্যায় বেশি হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে প্রচারের কৌশল সাজাচ্ছে বিভিন্ন দল। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই রাজ্যে শিক্ষা এবং চাকরির কী অবস্থা, তা তরুণ প্রজন্ম দেখছে। সর্বস্তরে দুর্নীতি চলছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় বসে। আদালতের রায়ে অযোগ্যদের চাকরি বাতিল হচ্ছে। এই বিষয়গুলি তরুণ প্রজন্ম ভাববে।’’

মোটের উপরে একই বক্তব্য সিপিএম জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের। তাঁর দাবি, বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের ব্রিগেড সমাবেশ প্রমাণ দিয়েছে, তরুণ প্রজন্ম ধীরে ধীরে বামেদের প্রতি আকৃষ্ঠ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘যৌবনের ডাকে জনতার ব্রিগেডে নতুন মুখের ভিড় কত ছিল, তা রাজ্যের মানুষ দেখেছেন। এ রাজ্যে কর্মসংস্থানের কী হাল, তা-ও মানুষ দেখছেন। কর্মসংস্থান না হলে তরুণ-তরুণীরা কাজ পাবেন কোথায়?’’ প্রদীপ মনে করেন, ‘‘রাজনীতি মানে কেবল সিপিএম-কংগ্রেস বা বিজেপি-তৃণমূল নয়। দেশকে ভালবাসা।’’ নতুন প্রজন্মের সামনে আজ কোন দিশা শাসক দল দেখাচ্ছে প্রশ্ন তুলে তাঁর দাবি, তরুণদের সিংহ ভাগই প্রতিষ্ঠান বিরোধী।

সিপিএম ও বিজেপির বক্তব্য নস্যাৎ করতে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া হাতিয়ার করেছেন কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্পকে। জেলায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধির হার পুরুষদের তুলনায় বেশি। তাঁদের সমর্থন তৃণমূলের দিকেই আসবে বলে দাবি রাজ্যের শাসক দলের। বিজেপিকে বিঁধে সৌমেন বলেন, ‘‘গত দশ বছর ধরে তরুণ প্রজন্ম বিজেপির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি শুনে আসছে। ভোটের আগে বিজেপি নেতাদের মুখে বছরে দু’কোটি বেকারের চাকরির প্রতিশ্রুতির কথা শুনেছে তরুণ প্রজন্ম। ভোট পার হয়ে গেলে বিজেপি যে ফিরেও তাকায় না, তা-ও মানুষ দেখেছেন। কোভিডের সময়ে বন্ধ হওয়া একাধিক ট্রেন আজও চালু হয়নি। একশো দিনের কাজ প্রকল্পের প্রাপ্য টাকা শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে না। তরুণ প্রজন্ম এ সব কথা মাথায় রেখেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কন্যাশ্রী বা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধা তো মহিলারা পাচ্ছেন। নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়েই তাঁরা ঠিক করবেন কাকে ভোট দেবেন। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, নতুন প্রজন্মের ভোট আমাদের দিকেই আসবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন