Pradhan Mantri Awas Yojana

প্রার্থী তালিকা নিয়ে ‘দ্বন্দ্ব’ বিধায়ক, ব্লক সভাপতিদের

সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন মুরারই ২ ব্লকের সভাপতি আফতাবউদ্দিন মল্লিক। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত তালিকা জেলায় পাঠাতে পারেননি।

Advertisement

তন্ময় দত্ত 

মুরারই  শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৩
Share:

আবাস যোজনা ঘিরে দ্বন্দ্ব। প্রতীকী চিত্র।

ব্লক সভাপতিদের পাঠানো পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী তালিকায় সই করেননি বিধায়ক। বদলে নতুন প্রার্থী তালিকা তৈরি করছেন তিনি। এ নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে মুরারই ১ ও ২ ব্লকের তৃণমূলের অন্দরে। যা নিয়ে কটাক্ষ করছে বিজেপিও।

Advertisement

সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন মুরারই ২ ব্লকের সভাপতি আফতাবউদ্দিন মল্লিক। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত তালিকা জেলায় পাঠাতে পারেননি। কারণ, মুরারইয়ের বিধায়ক মোশারফ হোসেন সেই তালিকায় সই করেননি। তিনি এর বদলে আলাদা একটি তালিকা তৈরি করেছেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। আফতাবউদ্দিন বলেন, ‘‘বিধায়কের সঙ্গে বৈঠক না-হওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। আজ, শনিবার বৈঠক হওয়ার কথা আছে। তার পরে তালিকা জেলায় পাঠানো হবে।’’

মুরারই ১ ব্লকের সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, ‘‘বিধায়ককে রাজ্য ও জেলার নির্দেশ মেনে প্রত্যেক বুথে বসে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য বলেছিলাম। তিনি সে সময় দিতে পারেননি। ফলে দলীয় ভাবে প্রার্থী তালিকা জেলায় পাঠানো হয়েছে। তিনি সে তালিকায় সই না করে, অন্য একটি তালিকা তৈরি করেছেন বলে কর্মীদের কাছে জেনেছি। ফলে, দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হবে। যাতে দলের ক্ষতি হয়, সেটা মেনে নিতে পারব না। বিধায়ককে অনুরোধ করব দলীয় ভাবে বিষয়টি সমাধান করার জন্য।’’

Advertisement

তৃণমূল কর্মীদের একাংশ জানান, যেখানে রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব প্রার্থী তালিকা স্বচ্ছ ও দুর্নীতি মুক্ত হবে বলে প্রচার করছেন, সেখানে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের কোন্দল চলছে। ব্লক সভাপতিদের অনুগামী তৃণমূলের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, বিধায়ক মোশারফ বিধানসভার ভোটের ১৫ দিন আগে তৃণমূলে এসেছিলেন। তিনি বুথকর্মী, অঞ্চল সভাপতিদের নাম ঠিকঠাক জানেন না।বিধায়ক সপ্তাহে এক দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য মুরারই আসেন। তিনি তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে না এসে নিজের বাড়িতে একটি কার্যালয় খুলে দলের অন্য গোষ্ঠীদের নিয়ে দলের ক্ষতি করছেন। যাঁরা দশ বছরের বেশি দল করছেন, তাঁদের নাম বাদ দিচ্ছেন বিধায়ক। অন্য দিকে, বিধায়কের অনুগামীদের অভিযোগ, ব্লক সভাপতি একচ্ছত্র ভাবে দল পরিচালনার চেষ্টা করছেন। অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা তৈরি করেছেন। এতে ভোটে ভরাডুবি হবেন। দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত মানুষজনকে প্রার্থী করলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।

বিধায়ক বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতিদের দেওয়া দু’টি তালিকাই আমি সই করিনি। প্রার্থী তালিকা নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। বুথ কমিটি থেকে তালিকায় অনেকের নাম এসেছে। যে প্রার্থী জিততে পারবেন, তাঁর নাম তালিকায় ঠাঁই পাবে। সেটাই তৈরি করছি। এ বিষয় দলে কোনওবিভাজন নেই।’’

এ বিষয়ে কটাক্ষ করেছেন বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহা। তিনি বলেন, ‘‘১৮ সালে যে রাজনৈতিক ছবি ছিল, এ বার তার উল্টো ছবি দেখবেন রাজ্যবাসী। তৃণমূলে দুর্নীতিতে কে প্রথম হবে, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। তাই প্রার্থী তালিকা নিয়ে এই দ্বন্দ্ব।’’ যদিও তৃণমূলের জেলা সম্পাদক ও রামপুরহাট মহকুমার পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য ও জেলার পক্ষ থেকে একটি প্রার্থী তালিকার খসড়া চাওয়া হয়েছিল। সেই তালিকা ব্লক সভাপতিরা পাঠিয়েছেন। এ বিষয় নিয়ে কোনও মতান্তর থাকলে দলগত ভাবে বিচার করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঠিক করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন