যত কাণ্ড বোলপুুরে, এ বার প্রসূতি-নিগ্রহের অভিযোগ

লেবার রুমে প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা সুন্দরীকে কর্তব্যরত এক নার্স নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বোলপুর শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২৭
Share:

সুন্দরী মার্ডি, যাঁকে নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ।

শর্ট-সার্কিট কাণ্ডের পরে এ বার রোগী নিগ্রহের অভিযোগ বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে! মঙ্গলবারই অস্ত্রোপচার চলাকালীন শর্ট-সার্কিটে শরীরের একাংশ পুড়ে যায় এক রোগীর। বুধবার বিকেলে হাসপাতালে আসা এক প্রসূতিকে গালিগালাজ ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে কর্তব্যরত এক নার্সের বিরুদ্ধে।

Advertisement

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতনের কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েতে তাঁতিজুল গ্রামের বাসিন্দা সোম মার্ডির স্ত্রী, সুন্দরী মার্ডির প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করা হয় সুন্দরীকে। এর পরে প্রসবের জন্য তাঁকে হাসপাতালের লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়।

লেবার রুমে প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা সুন্দরীকে কর্তব্যরত এক নার্স নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। সুন্দরীর ক্ষোভ, ‘‘প্রসব যন্ত্রণায় চিৎকার করায় ওই নার্স অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করেন ও মারধর করেন।’’ সুন্দরী পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। সদ্যোজাত পুত্রসন্তান অবশ্য সুস্থই আছে।

Advertisement

প্রসূতিকে নিগ্রহের ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর পরিবারের লোকেরা। প্রসূতিকে মারধরের অভিযোগ তুলে বিকেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। খবর পেয়ে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশকর্মীরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। প্রসূতির স্বামী সোম মার্ডি বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিল। সেই সময় অন্যায়ভাবে আমার স্ত্রীকে মারধর করেন কর্তব্যরত একজন নার্স। আমরা এর বিচার চাই।’’ যদিও এই ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ভারপ্রাপ্ত সুপার তীর্থঙ্কর চন্দ্র বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনার তদন্ত হবে। যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হন, তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

মঙ্গলবারও চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল এই হাসপাতালেই। অপারেশন থিয়েটারে রোগীর অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে শর্ট-সার্কিটের ফলে পুড়ে যায় রোগী পিঠ-সহ শরীরের একাংশ। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান ইলামবাজার থানার শোলার গ্রামের বাসিন্দা শেখ মফিজুল। সে দিনই চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করে মফিজুলের পরিবার। ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল হাসপাতালের তরফ থেকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার যে চারজন অপারেশন থিয়েটারে দায়িত্বে ছিলেন তাঁদের কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার। তিনি বলেন, ‘‘রিপোর্ট এলেই সেই রিপোর্ট আমরা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে পাঠিয়ে দেবো।’’

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মফিজুলের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। তাঁর চিকিৎসা চলছে ও তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন