ফাইল চিত্র।
এক দিকে ২৫ মে বিশ্বভারতীর সমাবর্তন, অন্য দিকে ওই একই দিনে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন। সব মিলিয়ে এখন উৎসবমুখর বিশ্বভারতী। শনিবারের সাংবাদিক বৈঠকে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেছিলেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি অনুষ্ঠান সূচিও তৈরি হয়ে যাবে। সেটি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হবে।’’ সমাবর্তন নিয়ে রবিবার বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের নেতৃত্বে ‘কোর কমিটি’র প্রথম বৈঠক হল। সেখানে বিশ্বভারতীর কর্মিসভা, অধ্যাপকসভা, প্রত্যেকটি ভবনের অধ্যক্ষ, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব, ফিন্যান্স অফিসার ছিলেন।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, বৈঠকে সমাবর্তনের মঞ্চ, গাড়ি, নিমন্ত্রণপত্র, বসার ব্যবস্থা, মণ্ডপ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। সমাবর্তন নিয়ে যে সমস্ত উপ-কমিটি হয়েছে সেগুলির তত্ত্বাবধায়কদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়। আলপনার দায়িত্বে থাকছে কলাভবন, অনুষ্ঠানের দায়িত্বে সঙ্গীতভবন। এ ছাড়াও ‘দেশিকোত্তম’, ‘রথীন্দ্র পুরস্কার’ ও ‘অবন-গগন’ পুরস্কার প্রাপকদের, সচিবালয়ে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রেক্টর হিসেবে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সহ অন্যান্য আধিকারিকদের নিমন্ত্রণ পাঠানোর কাজও শুরু হবে।
প্রায় পাঁচ বছর পর বিশ্বভারতীতে সমাবর্তন হবে। এতে খুশি বিশ্বভারতীর সব মহল। কর্মিসভার সভাপতি গগন সরকার বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন পর সমাবর্তন হচ্ছে, ছাত্রছাত্রীরা ভীষণ ভাবে উপকৃত হবেন। তাঁদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সমাবর্তন হচ্ছে এবং তাতে আচার্য হিসেবে প্ৰধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত থাকবেন।’’ তাঁর বক্তব্য, আরও একটা প্রাপ্তি হবে ওই দিনই। বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনে শেখ হাসিনার বিশ্বভারতী সফর। তিনি আরও বলেন, ‘‘২৫ তারিখ বিশ্বভারতীতে একটা খুশির দিন আসতে চলেছে। আমরা সবাই খুশি। সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রীও আসছেন। সে রকমই ইঙ্গিত মিলেছে প্রশাসনিক সূত্রে।’’ অধ্যাপকসভার সম্পাদক গৌতম সাহার কথায়, ‘‘উপাচার্যকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পাঁচ বছর পর আবার বিশ্বভারতীতে সমাবর্তন হচ্ছে। তবে আগামী বছর থেকে যাতে বার্ষিক সমাবর্তন হয়, সেই ব্যবস্থা করার জন্য তাঁকে অনুরোধ জানাচ্ছি। সমাবর্তনে যেন আর কোনও ছেদ না পড়ে।’’
বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য ও সম্পাদক বিকাশ চন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে যে কোনও সাহায্য করতে প্রস্তুত।’’
খুশির হাওয়া বইছে বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মনে। তাঁদের অনেকেই এখন কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। খবর শুনেই ওই দিন শান্তিনিকেতন আসার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। বর্তমান ছাত্রছাত্রীরাও খুশি। চোখের সামনে এত বড় একটা অনুষ্ঠান দেখাই তাঁদের প্রাপ্তি। তাঁরা বলেন— ‘‘এত দিন সমাবর্তন না হওয়ার কারণ হিসেবে শুনেছিলাম, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য থাকায় আচার্য আসতে চাইছেন না। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে কয়েক মাসের মধ্যেই উনি (সবুজকলি সেন) এই অসাধ্য সাধন করে দেখালেন। এক সময়ে বিশ্বভারতীর ছাত্রী, পরে অধ্যাপিকা থেকে ডিরেক্টর, শেষ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। তাঁর পক্ষেই এটা করা সম্ভব ছিল।’’