ফুল্লকুসুমিত: রঘুনাথপুর উপ-সংশোধনাগারে। ছবি: সঙ্গীত নাগ
চাষিদের দিয়ে যেটা করাতে পারেনি উদ্যানপালন দফতর সেটাই করে দেখিয়ে দিলেন বন্দিরা। রঘুনাথপুর উপ-সংশোধনাগারের পাঁচিল ঘেরা মাটিতে ফলল গোটা মশলা। ধনে, কালো জিরে, মেথি আর রসুন।
দফতরের রঘুনাথপুর মহকুমার আধিকারিক তামসী কোলে বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার মাটি আর আবহাওয়া মশলা চাষের উপযুক্ত। তাই কয়েক বার চাষিদের মেথি, ধনের মতো বীজ মশলা চাষে মাঠে নামানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সবুর করেননি। সময়ের আগেই মেথি বা ধনে শাক তুলে নিয়েছিলেন।’’
তামসীদেবী জানান, তাঁরা দেখতে চেয়েছিলেন পুরুলিয়ায় বীজ মশলা চাষ কতটা সফল হচ্ছে। উপ-সংশোধনাগারে ছ’কাঠা জমিতে ফলন দেখার পরে দাবি করছেন, প্রচেষ্টা সার্থক। মনে করা হচ্ছে, নিদেন পক্ষে দশ কিলোগ্রাম গোটা মশলা পাওয়া যাবে সেখান থেকে। আর রসুন হবে অন্তত এক কুইন্টাল।
মহকুমা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশের মধ্যে প্রচুর মশলা চাষ হয় রাজস্থান আর গুজরাতের শুকনো এলাকায়। জলবায়ুর দিক দিয়ে তার সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে পুরুলিয়ার। তামসীদেবী জানান, বীজ মশলা চাষে দরকার হয় শুকনো আবহওয়া আর কম আর্দ্রতা। অনুর্বর মাটিতে খুবই কম জলে কাজ চলে যায়। সবই রয়েছে পুরুলিয়ায়।
আজমের থেকে বীজ এনে গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলের মধ্যে বন্দিদের নিয়ে মশলা চাষ শুরু করেছিল উদ্যানপালন দফতর। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন মরসুমে আনাজ বা ফুল চাষ করে রীতিমতো হাত পাকিয়েছেন রঘুনাথপুর উপ-সংশোধনাগারের বিচারাধীন বন্দিরা। তামসীদেবী জানান, মশলা চাষের কায়দাকানুনও তাঁরা রপ্ত করে ফেলেছেন চটপট। আড়াইশো গ্রাম করে জিরে, ধনে, মেথি, কালো জিরে আর রসুনের বীজ দেওয়া হয়েছিল। ফল প্রত্যাশার থেকেও ভাল হচ্ছে।
উপ-সংশোধনাগারের কন্ট্রোলার অভিজিৎ বিশ্বাস মশলা চাষে সাফল্যের পুরো কৃতিত্বটাই দিচ্ছেন বিচারাধীন বন্দিদের। তিনি বলেন, ‘‘গত বছরই তামসীদেবী মশালা চাষের প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন। কিন্তু নানা কারণে সেটা করা হয়নি। এ বার বন্দিদের উৎসাহ দেখেই করা হল।’’
আগে রঘুনাথপুর জেলে ফলা পেঁয়াজ পাঠানো হয়েছে রাজ্যের অন্য জেলে। একই ভাবে মশলাও বাইরে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন অভিজিৎবাবু।