এখানেই হবে ফ্লাইওভার। ভীমগড় লেভেল ক্রসিং। —নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় সড়কের গতিপথ আটকে থাকে দু’টি লেভেল ক্রসিং। আর তা থেকেই রেহাই মিলতে চলেছে এ বার। ভীমগড় স্টেশন এবং সিউড়ি স্টেশন লাগোয়া আবদারপুর— ওই দুই লেভেল ক্রসিংয়ের উপর প্রায় ৪০০ কোটি টাকা খরচে তৈরি হতে চলেছে দু’টি ফ্লাইওভার।
গত বছর জুলাই মাসেই বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমকে প্রথম ওই দু’টি ফ্লাইওভার হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সিউড়িতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, জেলাপ্রশাসন এবং পূর্ত দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ইন্দিবর পাণ্ডের একট উচ্চ পর্যয়ের বৈঠক পরে তা নিশ্চিত করল জেলা প্রশাসন। তবে শুধু ওই ফ্লাইওভারই নয়, এই মুহূর্তে জেলায় জাতীয় সড়কের কর্তৃপক্ষের হাতে থাকা চারটি প্রকল্পের হাল হকিকত কী, বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ কীভাবে হবে, কোথাও কোনও সমস্যা আছে কিনা— তা নিয়েও এ দিন পর্যালোচনা হয়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের চারটি বড় প্রকল্প নিয়ে গত নভেম্বরে এমনই একটি বৈঠক হয়েছিল। প্রকল্পগুলি হল— এক, দুবরাজপুরে জাতীয় সড়কের বাইপাস। দুই, রামপুরহাট মনসুবা মোড় থেকে ঝাড়খণ্ড (দুমকা) বর্ডার শুঁড়িচুয়া পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ১১৪এ রাস্তার অংশটি দুই লেনে সম্প্রসারণ। তিন, জাতীয় সড়ক ২বি-র অধীনে থাকা বর্ধমান বর্ডার থেকে বোলপুরের শিবতলা মোড় পর্যন্ত চার কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ। চার, বোলপুরের শিবতলা মোড় থেকে মল্লারপুর পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার রাস্তার সম্প্রসারণ।
এ দিন সিউড়িতে প্রশাসনিক ভবনে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী, জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রঞ্জন ঝা, অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) নীলকমল বিশ্বাস, জাতীয় সড়কের ডিভিশন ১২-এর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিশিকান্ত সিংহ, চিফ ইঞ্জিনিয়ার দীপঙ্কর ঘোষ, একাধিক বিএলআরও প্রমুখ।
ঘটনা হল, দিনের মাথায় যত বার প্যাসেঞ্জার, লোকাল, দূরপাল্লার ট্রেন কিংবা মালগাড়ি পারাপার করে— ওই দুই লেভেল ক্রসিংয়ের দু’দিকে তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর থাকা পূর্বরেলের অন্ডাল-সাঁইথিয়া শাখার ভীমগড় এবং সিউড়ি স্টেশনের আবদারপুর লেভেল ক্রসিংয়ে এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। ফ্লাইওভার হলে সেই সমস্যা দূর হবে। ইন্দিবর পাণ্ডে এ দিন এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলাশাসক বলেন, ‘‘দু’টি ফ্লাইওভারের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের একটা প্রক্রিয়া চলছে। যে জমি নেওয়া হবে, তার রেকর্ড সংক্রান্ত কিছু কাজ বাকি। সপ্তাহখানেকের মধ্যে সেই প্রক্রিয়া শেষ হবে। জেলার অন্য প্রকল্পগুলি কোথায় কী অবস্থা, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’’ একই বক্তব্য নিশিকান্তবাবুরও।