সোমবারও অচলাবস্থা কাটল না বিশ্বভারতীতে। এখনও উপাচার্য-বিহীন হয়েই চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় কাজ। এরই মধ্যে বিশ্বভারতীর অধ্যাপকসভা, কর্মিসভা ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের একাংশের পক্ষ থেকে সোমবার বিকেলে ধিক্কার মিছিল বের হয়। মিছিল থেকে শীঘ্রই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবি ওঠে।
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপনকুমার দত্তের সময়কাল শেষ হয়েছে ২৭ জানুয়ারি। ওই দিন থেকেই তিনি দিল্লি রয়েছেন। বিশ্বভারতীর একাংশের অভিযোগ ছিল, কাউকে কোনও দায়িত্ব না দিয়েই এ ভাবে তিনি চলে গেলেন কেন? এমন অবস্থায় প্রবীণতম ডিরেক্টরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু, তাঁকেও এ বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যাপক সভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সহ উপাচার্যই কার্যভার সামলান। সেই জন্যই কাউকে কোনও দায়িত্ব না দিয়ে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ডাকে শনিবার তিনি দিল্লি চলে যান। তবে এ দিনও যোগাযোগ করা যায়নি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপনকুমার দত্তের সঙ্গে। এই দু’দিন দেখা পাওয়া যায়নি ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অমিত হাজরারও। তবে সোমবার তিনি বিশ্বভারতীতে ফিরেছেন বলে খবর।
এ দিকে, বিশ্বভারতীর অচলাবস্থা কাটাতে রবিবার কর্মসচিবের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়েছিলেন বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য এবং সম্পাদক বিকাশ গুপ্ত। স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার পথে তাঁদের উপরে এক দল চড়াও হয়ে কটূক্তি করে বলে অভিযোগ। যদিও এ বিষয়ে তাঁরা কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। ওই কটূক্তি, হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে অর্থনীতি বিভাগের পড়ুয়ারা সোমবার পদযাত্রা বের করে। ঘটনার তদন্তের জন্য ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবকে স্মারকলিপিও জমা দেয়। বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের তরফে কালো ব্যাজ পরে এই ঘটনার প্রতিবাদ করা হয়। উপাসনাগৃহ থেকে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হলেও ওই একই সময়ে অধ্যাপকসভার পদযাত্রা থাকায় বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সমাবেশটি পিছিয়ে দেওয়া হয়।
বিশ্বভারতী অধ্যাপক সভা, কর্মিসভা ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে সোমবার বিকেলে ধিক্কার মিছিল হয়। বিশ্বভারতীর প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতার প্রতিবাদেই এই মিছিল বলে আয়োজকদের দাবি। শীঘ্রই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবিও ওঠে ওই মিছিল থেকে। তার সঙ্গেই সপ্তম পে কমিশন লাগু করা, কর্মী নিয়োগ চালু করার দাবি তোলা হয়। অধ্যাপক সভার সম্পাদক গৌতম সাহা জানান, বিশ্বভারতীকে দীর্ঘ দিন ধরে এই সমস্যাগুলির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন। তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই এই পদযাত্রা করা হয়েছে।