Jhalda Municipality

‘এখন বুঝছি, রাজনীতির জন্যই প্রাণ দিতে হয়েছিল স্বামীকে’, রায় শুনে বলছেন পূর্ণিমা কান্দু

নিহত কংগ্রেস নেতা তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা আদালতের রায়কে সত্যের জয় এবং ঝালদাবাসীর জয় বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর দাবি, রাজনীতির কারণেই তাঁর স্বামীকে খুন হতে হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:৪০
Share:

পূর্ণিমা কান্দু (বাঁ দিকে), শীলা চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)— একই ফ্রেমে বর্তমান ও প্রাক্তন। — নিজস্ব চিত্র।

আদালতের নির্দেশে ঝালদা পুরসভার অন্তর্বর্তীকালীন পুরপ্রধান হিসাবে কাজ সামলাবেন নিহত কংগ্রেস নেতা তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা। এই খবর শোনার পর পূর্ণিমা বলেন, ‘‘যা চলছে তাতে আমি নিশ্চিত, রাজনীতির জন্যই আমার স্বামীকে প্রাণ দিতে হয়েছে।’’ পূর্ণিমাকে পুরসভার উপ পুরপ্রধান করা হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতির ফেরে তিনিই এখন ঝালদা পুরসভার পুরপ্রধানের ভার সামলাবেন।

Advertisement

ঝালদা পুরসভা নিয়ে শুক্রবার হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, আপাতত আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব সামলাবেন উপ পুরপ্রধান পূর্ণিমা। ১০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি। উল্লেখ্য, একদিন আগেই পুরপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়া শীলা চট্টোপাধ্যায়ের সদস্যপদ খারিজ করেন ঝালদার মহকুমাশাসক। একই সঙ্গে তৃণমূল কাউন্সিলর সুদীপ কর্মকারকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব দেয় রাজ্য। তার বিরুদ্ধে শুক্রবারই উচ্চ আদালতে যায় কংগ্রেস। শুক্রবার এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পূর্ণিমা বলেন, ‘‘এই জয় সত্যের জয়। এই জয় ঝালদা পুরসভা এলাকার মানুষের জয়। এবং এই জয় আমার অকালপ্রয়াত স্বামীর। যাঁকে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে। ঝালদা পুরসভা নিয়ে যা কিছু হচ্ছে তাতে এটা বিষয় পরিষ্কার যে, আমার স্বামীকে রাজনীতির জন্যই প্রাণ দিতে হয়েছে এবং যাঁরা জেলে আছেন তাঁরাও শাসক দলেরই লোক।’’ পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। পুরুলিয়ার তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘আদালতের রায় শিরোধার্য। তবে আমরা শীলা সদস্যপদ খারিজের যে আবেদন করেছিলাম তা নিয়ম মেনেই। তার পক্ষে প্রমাণও পেশ করেছি। আর তপন কান্দু খুনে আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি যে দোষীরা ধরা পড়ুক, শাস্তি পাক। এ নিয়ে সিবিআই তদন্ত হয়েছে। এ বার এটা নিয়েও রাজনীতি হচ্ছে।’’ অন্য দিকে ঝালদা পুরসভা এলাকায় সার্কাস চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রাঙা। তিনি বলেন,‘‘এ সব করে ঝালদা পুরসভা এলাকায় যে সকল মানুষ ভোট দিয়েছেন তাঁদের অপমান করা হচ্ছে। কংগ্রেস ও তৃণমূলের ক্ষমতা দখলের লড়াই চলছে। আর মানুষ সেই বঞ্চিতই থেকে যাচ্ছেন।’’

ঝালদা পুরসভার ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, কংগ্রেস না তৃণমূল— এই প্রশ্নের মীমাংসা এখনও অধরা। চলতি সপ্তাহেই পুরপ্রধান হিসাবে শপথ নেন শীলা চট্টোপাধ্যায়। নির্দলের সমর্থন নিয়ে ঝালদায় বোর্ড গড়ে কংগ্রেস। কিন্তু তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই শীলার কাউন্সিলর পদ খারিজ করার নির্দেশনামা জারি করেন ঝালদার মহকুমাশাসক। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে তৃণমূলের এক কাউন্সিলরকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। রাজ্যের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে যায় কংগ্রেস। শুক্রবার হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত গত ১৮ জানুয়ারি নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে (শীলা চট্টোপাধ্যায়) সরানোর নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ বজায় থাকবে। তত দিন পুরসভার দায়িত্ব সামলাবেন কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা নিহত কংগ্রেস নেতা তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement