একাগ্র: গাঁধীজিই আদর্শ মাঝিহিড়া জাতীয় বুনিয়াদি স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র।
ইংরেজরা অনেকদিন আগেই ভারত ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু প্রতি বারের মতো এ বারও ১৯৪২ সালের ৯ অগস্ট ইংরেজদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ইতিহাসকে স্মরণ রাখতে বিশেষ অনুষ্ঠান করল মানবাজারের মাঝিহিড়া জাতীয় বুনিয়াদি বিদ্যালয়। পড়ুয়াদের কেউ চরকা বুনল, কেউ কেউ তাদের তাদের হাতের কাজ সাজিয়ে প্রদর্শনী করল। এ দিনটা এক কথায় অন্যরকম ভাবে কাটাল মাঝিহিড়া জাতীয় বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।
গাঁধীজির আর্দশে গড়ে ওঠা এই স্কুল এখনও তাঁর দেখানো পথ ধরেই এগিয়ে চলেছে। এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত গত বছর প্রয়াত হয়েছেন। কিন্তু তাঁর চালু করা অসহযোগ আন্দোলনের স্মরণ-অনুষ্ঠান বুধবার সেই ঐতিহ্য মেনেই করলেন উত্তরসূরীরা।
মাঝিহিড়া আশ্রম বিদ্যালয়ের কার্যকরী সম্পাদক প্রসাদ দাশগুপ্ত জানান, ১৯৪০ সালে মানবাজারের মাঝিহিড়া গ্রামে এই স্কুল শুরু হয়েছিল। পরে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এই স্কুলের নাম জড়িয়ে যায়। জাতীয়স্তরের নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বিভিন্ন সময় এই আশ্রমে এসেছেন। এটি শুধুমাত্র স্কুল হিসাবে নয়, মানুষ গড়ার একটা কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত হয়।’’ তিনি জানান, ৯ অগস্ট স্কুলের প্রতিষ্ঠা দিবসও। এ ছাড়া এই চত্বরে একটি পিটিটিআই কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিষ্ঠা দিবসে পড়ুয়াদের স্কুলের ইতিহাসের সঙ্গেও পরিচিত করা হয়।
এ দিন স্কুলের বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়ারা প্রদর্শনী কেন্দ্রে তাঁদের কাজ তুলে ধরেন। পুরুলিয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। স্কুলের পক্ষ থেকে এ দিন কৃতী পড়ুয়াদের শিক্ষা এবং খেলাধুলার ক্ষেত্রে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
মাঝিহিড়া আশ্রম স্কুলের অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে চরকা চালানোর প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। আশ্রম বিদ্যালয়ের অন্যতম কর্তা প্রদীপ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘চরকা সে যুগে ইংরেজ শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মাধ্যম ছিল। আমরা এই ইতিহাসকে ধরে রাখার জন্যে পড়ুয়াদের চরকার তালিম দিয়ে থাকি।’’