Duare sarkar

Duare Sarkar: দুয়ারে রেশন প্রকল্পে ভাড়া দেবে কে, প্রশ্ন ডিলারদের

আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে পুরুলিয়া জেলার ১৬৬টি রেশন দোকানের এলাকায় দুয়ারে রেশন কর্মসূচির ‘পাইলট প্রজেক্ট’ শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৯:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি

দুয়ারে রেশন প্রকল্পে গ্রাহকদের দরজায় রেশন সামগ্রী পৌঁছে দিতে কমিশন বাড়ানো, পরিবহণ খরচ দেওয়ার দাবি তুললেন রেশন ডিলারেরা। সেই সঙ্গে রেশন ডিলারদের মাধ্যমে যে ওই পরিষেবা চালু করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করার দাবি তুলেছে ‘ওয়েস্টবেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা শাখা। মঙ্গলবার রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পরে বিকেলে রেশন ডিলারেরা জেলা খাদ্য নিয়ামকের অফিসে এই বিষয়গুলি তোলেন। কিছু দিন আগে খাদ্য দফতরে তাঁরা এই দাবিগুলি নিয়ে স্মারকলিপিও দেন।

Advertisement

রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী বুধবার বলেন, ‘‘মানুষের সুবিধার্ধে রেশন ডিলারদের এই প্রকল্পের কাজ করতে হবে। তাঁদের দাবি-দাওয়া সম্পর্কে ভাবনা-চিন্তা রয়েছে। এখনও এই মর্মে কোনও সরকারি নির্দেশিকা বেরোয়নি। ডিলাররা আমাদের সহযোগিতা করছেন। তাঁদের কথাও আমরা ভাবব।’’

আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে পুরুলিয়া জেলার ১৬৬টি রেশন দোকানের এলাকায় দুয়ারে রেশন কর্মসূচির ‘পাইলট প্রজেক্ট’ শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। জেলার ২০টি ব্লকের দু’টি করে পঞ্চায়েত এবং তিনটি পুরসভার দু’টি করে ওয়ার্ডে এই প্রকল্প শুরু হবে। ব্লকের ক্ষেত্রে ব্লক সদরের পঞ্চায়েত ও ওই ব্লকের প্রত্যন্ত একটি পঞ্চায়েতকে বাছাই করা হয়েছে। কী ভাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে রেশনপণ্য পৌঁছনো হবে, তার প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার জেলায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়।

Advertisement

সেখানে উপস্থিত রেশন ডিলারদের সংগঠনের নেতৃত্ব নিজেদের দাবিদাওয়ার কথা তুলে ধরেন। এ দিন সংগঠনের নেতৃত্ব সে ব্যাপারে বিশদে জানান। তাঁদের দাবি, বর্তমানে তাঁরা কুইন্টাল প্রতি ৭৫ টাকা কমিশন পান। তা ২৫০ টাকা করার দাবি তোলা হয়েছে। গাড়িতে রেশনপণ্য নিয়ে গ্রামে গ্রামে বিলি করার জন্য চালক-সহ পাঁচ জন কর্মীর প্রয়োজন। ওই কর্মীদের মাইনে কে দেবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এর সঙ্গে ‘হ্যান্ডলিং লস’ অর্থাৎ রেশন সামগ্রী বিলির সময় পড়ে গিয়ে যেটুকু নষ্ট হবে, সেই ক্ষতি কী ভাবে পূরণ হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রেশন ডিলারেরা।

পাশাপাশি, পরিবহণ খরচ দেওয়া নিয়েও তাঁরা সংশয়ে। সংগঠনের জেলা সম্পাদক প্রভাশিষলাল সিংহ দেও বলেন, ‘‘যে গাড়িতে রেশনপণ্য বহন করা হবে, তার ভাড়া রেশন ডিলারকেই দিতে হবে, নয়তো তাঁকে কিনতে হবে। ভাড়ার ক্ষেত্রে টাকা এবং গাড়ি কিনলে কিস্তির টাকা কে মেটাবে, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। অনেক দুর্গম গ্রাম বা টোলায় গাড়ি না ঢুকলে কী ভাবে সেখানে রেশন সামগ্রী পৌঁছনো যাবে, তা-ও স্পষ্ট নয়।’’

প্রভাশিষবাবুর দাবি, তাঁরা বাস্তব কিছু সমস্যা তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে খাদ্য দফতরকে তাঁরা জানিয়েছেন, রেশন ডিলারদের মাধ্যমেই যে এই কাজ করা হবে, সে বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হোক। সংগঠনের প্রস্তাব, দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে যে ভাবে এক একটি পঞ্চায়েতের এক এক জায়গায় শিবির করা হচ্ছে, দুয়ারে রেশনও সে ভাবেই করা হোক।

পুরুলিয়ার সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই প্রকল্পে ডিলারদের কিছু অসুবিধা রয়েছে। তা নিয়ে রাজ্য সরকার ভাবনা-চিন্তা করছে। তবে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির মতো রেশন ডিলারেদের প্রস্তাব মতো দুয়ারে রেশন কর্মসূচি করার উপায় নেই। মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়েছেন, মানুষের দরজায় রেশনপণ্য পৌঁছে দিতে হবে। সেটাই করতে হবে।’’

জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘এটা ‘পাইলট প্রজেক্ট’। কাজ শুরু হোক। রেশন ডিলারেরা যে সমস্ত সমস্যার কথা জানিয়েছেন, তার সমাধানে প্রশাসন সহযোগিতা করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন