আচমকা: একটানা গুমোট গরমের পরে আরামের বৃষ্টি। রবিবার বিকেলে সিউড়ির রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
দিন পাঁচেক ধরে বাজার ‘উঠছিল’। ব্যবসায়ীরা আশায় ছিলেন, রবিবার এক লাফে বিক্রিবাটা বাড়বে। কিন্তু, মোক্ষম সময়ে বৃষ্টি তাতে জল ঢেলে দিল।
রবিবার বিকেল তিনটে থেকে চারটে, সাড়ে চারটে থেকে ছ’টা— তারপরও রাত পর্যন্ত কখনও ঝিরঝির করে, কখনও ঝেঁপে বৃষ্টি হয়েছে। তাতে গরম কমেছে ঠিকই। কিন্তু, কপালে ভাঁজ চওড়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের। অন্য বার এই সময়ে যেখানে নতুন জামা-জুতো-ব্যাগ-গয়না-প্রসাধনীর জোগান দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারেন না তাঁরা, এ বছর এখনও জমে আছে সামগ্রীর পাহাড়। অথচ হাতে আর মাত্র দশ দিন।
এ দিন রামপুরহাটের নানা এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেল, দোকান খোলা কিন্তু ক্রেতা হাতেগোনা। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। রামপুরহাট কামারপট্টি মোড় লাগোয়া নতুন বাজারে কিছু ক্রেতার দেখা মিলল। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে কয়েক জন মহিলাকে দেখা গেল রামপুরহাট দেশবন্ধু রোড এবং কামারপট্টি মোড় এলাকার দুটি পুরনো কাপড়ের দোকানে। সেই সব এলাকা বেমালুম ফাঁকা হয়ে গেল বৃষ্টিতে। এক দোকানির কথায়, ‘‘পঞ্চাশ হাজার টাকার বিক্রিও হবে কিনা জানি না।’’
বৃষ্টির মাথায় রামপুরহাট থানার ছাতমা গ্রাম থেকে সপরিবার পুজোর বাজার করতে এসেছিলেন লাল্টু মণ্ডল। হাতে সময় নেই দেখে এ দিনটাই বেছে নিয়েছিলেন। বৃষ্টি মধ্যেই মেয়ের জন্যে কিনলেন টু-পার্ট, জ্যাকেট সঙ্গে লেগিন্স। আর একটি পরিবারকে দেখা গেল থ্রি ডি শাড়ির খোঁজ করছেন। রামপুরহাট হাটতলার ব্যবসায়ীরা জানালেন, থ্রি-ডি শাড়ি ছাড়া, প্লেন স্লিকের শাড়ি, কেরালা কটন, আনারকলি, বাহামনি শাড়ির চাহিদা যথেষ্ট। চাহিদা রয়েছে ২৫০০ থেকে
৫৫০০ টাকার ঢাকাই জামদানিরও। বিকোচ্ছে বাজিরাও মস্তানি, টোন জিন্স, লেহেংগা, লেগিন্স, লঙ স্কার্ট, চুড়িদার, লং ফ্রকও।
রামপুরহাট বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মহম্মদ সরিফউদ্দিন বলেন, ‘‘দিন পাঁচেক হল বাজার উঠতে শুরু করেছিল। গ্রামেও লোকজনও বাজরে আসতে শুরু করেছিলেন। আশা ছিল রবিবার একলাফে বিক্রি বাড়বে। সেটাই পণ্ড করে দিল বৃষ্টি।’’ তবে ব্যবসায়ীদের একাংশই জানাচ্ছেন, জিএসটি-র কারণে পুরনো স্টক ক্লিয়ার করতে কিছু দিন আগে ঢালাও ছাড় দেওয়া হয়েছে। সেই সুযোগে অনেকে পুজোর কেনাকাটা করে নিয়েছেন। বিশেষত শহরের ক্রেতারা। এখন ভরসা তাই গ্রামাঞ্চলের ক্রেতারাই।